ডলার সঙ্কট: এলসির অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংক
ডলার সঙ্কটের কারণে এলসি’র (আমদানি ঋণপত্র) অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। ফলে ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে এবং অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার বাজার। এমতাবস্থায় মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই পদক্ষেপকে সমস্যার সাময়িক সমাধান হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দেশের বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে প্রতি ডলার বিক্রয় হয়েছে প্রায় ৮৫ টাকা। এছাড়া প্রতি ইউরো ক্রয় হচ্ছে ৯৪ টাকা ৮৫ পয়সা আর বিক্রি হচ্ছে ৯৪ টাকা ৮৮ পয়সা। ব্রিটিশ পাউন্ড ক্রয় হচ্ছে ১০৮ টাকা ৯৯ পয়সা আর বিক্রি হচ্ছে ১০৯ টাকা ৪ পয়সা। ভারতীয় রুপি ক্রয় হচ্ছে ১ দশমিক ১৫৯৯ টাকা আর বিক্রি হচ্ছে ১ দশমিক ১৬০১ পয়সা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজ বলেন, ‘বর্তমান সঙ্কট সমাধানে বাজারে ডলার বিক্রি করা আপনদকালীন সমাধান হলেও এতে সমস্যাও আছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই অর্থ তার রিজার্ভ থেকে দিবে। ফলে দেশের রিজার্ভ কমে যেতে পারে।’
জানা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে আমদানি ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৫৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে একই সময়ে ৯৭৪ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ।
পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য আমদানি ও সরকারের মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে আলোচ্য সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি অনেক বেড়েছে। যদিও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি ব্যয় ৫ শতাংশ কমেছে।
প্রসঙ্গত: চলতি অর্থবছরের জুলাই- সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে ডলারের সঙ্কট দেখা দেয়। বর্তমানে সঙ্কট এতটা তীব্র আকার ধারণ করেছে যে সম্প্রতি ডলার প্রতি বিনিময় হার বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ টাকার বেশি বেড়েছে। আর ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি ব্যয় বেড়ে যাচেছ। এর প্রভাব পড়ছে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে।
তবে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়াও ডলার সঙ্কটের নেপথ্যে অন্য কারণও থাকতে পারে বলে মনে করেন কেউ কেউ। তাদের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও কাস্টমসকে এই বিষয়টিকে গভীরভাবে খতিয়ে দেখতে হবে।
অন্যান্য কারণ প্রসঙ্গে মির্জ্জা আজিজ বলেন, ‘সামনে নির্বাচন। তাই অনেকেই আমদানিতে মূল্য বাড়িয়ে বা হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচার করে থাকতে পারে। দেশে যেভাবে অর্থ পাচার হচ্ছে তাতে এটা একটি স্বাভাবিক কারণ। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংককে এটা একার পক্ষে রোধ করা সম্ভব না। তাই আমদানি-রপ্তানির সাথে জড়িত সকল প্রতিষ্ঠানকে একসাথে কাজ করে সমস্যার সমাধাস করতে হবে।’