যুক্তরাষ্ট্রে শপিংমলে বন্দুকধারীর হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৯
যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত থেকে কয়েক মাইল দূরে এলপেসোর সিয়েলো ভিস্তা মলে এ ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের প্রায় তিন ঘণ্টা পর, বাংলাদেশ সময় ভোর ৫টার কিছু আগে জানা গেছে, নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ১৯। স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে কমপক্ষে ২৩ জন আহত ব্যক্তি চিকিৎসার জন্য গেছেন। হামলাকারী ২১ বছরের এক টেক্সান, নাম প্যাট্রিক ক্রুসিয়াস। এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে শোক ও সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিবিসি, সিবিএস, সিএনএন
এলপেসোর মেয়র ডি মারগো ও পুলিশ সার্জেন্ট এনরিক কাস্টিলো নিশ্চিত করেছেন, হামলায় বেশ কজন নিহত হয়েছেন। হামলাকারিকে নিবৃত্ত করা হয়েছে, এ কথা উল্লেখ করে কর্তৃপক্ষ বলেছে, আর কোনো ঝুঁকি আছে বলে মনে করা হচ্ছে না। আরেক পুলিশ সার্জেন্ট রবার্ট গোমেজ জানান, একজনকে তারা ধরতে পেরেছেন।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ১১ জনকে ডেল সোল মেডিক্যাল সেন্টারে নেয়া হয়। হাসপাতালের মুখপাত্র ভিক্টর গুয়েরো জানান, আহতদের ৯ জনের অবস্থা গুরুতর ছিলো। তবে এখন তাদের অবস্থা স্থিতিশীল। আরো ১১ আহতকে এলপেসোর ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে একজনের মৃত্যু ঘটেছে বলে হাসপাতালের মুখপাত্র রায়ান মেইকি জানান।
প্রথমে ধারণা করা হয়েছিলো অজ্ঞাতনামা হামলাকারীর অস্ত্র ছিলো রাইফেল। তবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হয়ে পুলিশ সার্জেন্ট রবার্ট গোমেজ বলেন, এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, অস্ত্রটি কী ছিলো।
এলপেসোর মেয়র ডি মারগো এই ঘটনায় প্রচণ্ড আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, আমাদের শহরে এমন একটি ঘটনা ঘটবে, কখনো ভাবতেই পারিনি।
সরকারি সূত্র হামলাকারীর পরিচয় নিশ্চিত করে জানিয়েছে, অনলাইনে দেয়া একটি পোস্ট তারা পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন। এ থেকে হত্যাকাণ্ডের মোটিভ সম্পর্কে জানা যাবে বলে আশা করছে পুলিশ। পোস্টটি প্যাট্রিক লিখেছে বলে পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, তবে তা এখনো নিশ্চিত নয়।
এদিকে টেলিভিশনে নির্মম হত্যাযজ্ঞের খবর দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন শহরের মানুষ। অনেকেরই আত্মীয়-পরিজন ওই শপিং সেন্টারে কাজ করেন। ফ্রান্সেস ইয়েপেজ নামের এক মহিলা জানান, খবর দেখেই তিনি তার দুই ছেলের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। তার যে ছেলেটি শপিং মলে কাজ করে, সে ঘটনার সময় নিরাপদেই ছিলো।
এরই মধ্যে টুইটারে পুলিশ রক্তের জন্য আবেদন জানায়। আহতদের চিকিৎসায় অনেক রক্ত লাগবে, জানার পর পরই ঘর ছেড়ে বের হয়ে আসে শহরের প্রচুর মানুষ।
ফ্রান্সেস বলেন,এন জারাগোজা সড়কের ভিটাল্যান্ট ব্লাড সার্ভিসের সামনে তিনি যখন সিএনএন রিপোর্টারের সঙ্গে কথা বলছিলেন, ততোক্ষণে রক্তদানের লাইনে দু”ঘণ্টা পার করে ফেলেছেন তিনি। এতো মানুষ রক্ত দিতে গিয়েছিলো, কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই সেন্টারের রক্তধারণ ক্ষমতা সেদিনের মতো শেষ। তবুও লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে মানুষ পরদিন রক্ত দেয়ার জন্য নাম লিখিয়ে যাচ্ছিলেন।