ডেঙ্গুর কারণে অনেকেই হাসপাতালে ঈদ করতে বাধ্য হয়েছেন
নারায়ণগঞ্জ থেকে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তারিফ সরদার (৪০)। দুই ছেলে-মেয়ের বাবা তিনি। তারিফের প্লাটিলেট কমে যাচ্ছে। কিন্তু তা নিয়ে তার তেমন ভাবনা নেই। ভাবনা আছে ছেলে-মেয়ের সঙ্গে ঈদ করতে না পারার। জানালেন, বড় খারাপ লাগছে তার। এনটিভি অনলাইন
শিশু নাজিয়া সরকার (৫) ভর্তি আছে ঢাকা মেডিকেলের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা শহরে। নাজিয়ার বাবা তারেক সরদার ও মা রেবেকা সরদার তিন দিন ধরে ঢাকা মেডিকেলে মেয়ের সাথেই আছেন। গতকাল রাতে তারেক সরদার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় যাওয়ার কথা ছিলো। তিনি বলেন, ‘গিয়ে ঈদের নামাজ পড়ে গরু কোরবানি করে আবার ঢাকায় ফিরবেন।’
তারেক সরদার বলেন, ‘বাড়িতে মা-আব্বা আছেন। এদিকে আমার মেয়ে হাসপাতালে। প্রথমে ভেবেছিলাম সবাই গ্রামে চলে যাবো। কিন্তু মেয়ের প্লাটিলেট এখনো ১ লাখের বেশি হয়নি, তাই সবাই যাচ্ছি না। কিন্তু বৃদ্ধ মা-বাবাকে রেখে এখানে কীভাবে থাকি? আবার গেলেও আমার মেয়ে কী ভাববে আমাকে? তবু যেতে হবে, কিছু করার নেই। আমি ঈদের দিন দুপুরেই আবার চলে আসবো।’
পুরান ঢাকার নাজিরা বাজারের বাসিন্দা আলতাফ মণ্ডল। তার ছোট ছেলে আবদুর রহমান ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন। এখানে সব সময় দুজনকে থাকতে হয়। আলতাফের স্ত্রী অসুস্থ থাকায় তিনি বাড়িতে আছেন। ছেলের সঙ্গে আছেন বাবা ও তার দাদি।
আলতাফ মণ্ডল বলেন, ‘কী এক মুশকিল। ঈদের দিনও এখানে অন্তত একজনকে থাকতেই হবে। ছেলেকে ঈদের দিন আমার পরিবারের সবাই হাসপাতালে দেখতে আসবে। এ কেমন ঈদ! ঈদের দিন যেখানে ছেলে আমার আনন্দ করে বেড়াবে, সেখানে তার যুদ্ধ করতে হচ্ছে জ্বরের সঙ্গে। থাকতে হচ্ছে আমাদেরও। যুদ্ধটা আসলে সবাইকেই করতে হচ্ছে।’
এ রকম আরো কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। অধিকাংশেরই মন খারাপ, ভালো করে বাড়িতে ঈদ করতে না পারায়। এদের ভেতরে আবার ব্যতিক্রমও আছে। চিকিৎসকরা ছাড়পত্র দিলেও হাসপাতাল ত্যাগ করেননি তারা। বরং তাদের অভিযোগ, জ্বর ঠিক মতো সারার আগেই ছুটি দিয়েছেন চিকিৎসক।