এবারও চামড়া পচে নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা
গত বছরের কোরবানির ঈদের তুলনায় এবছর চামড়ার দাম আরও কম। একারণে এবারও অনেক চামড়া পচে-গলে নষ্ট হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর ধানমন্ডির বিভিন্ন এলাকায় চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
রায়হান নামে এক যুবক পড়াশোনার পাশাপাশি চামড়া ব্যবসাও করেন মাঝেমধ্যে। এবার পাঁচটি গরুর চামড়া কিনেছেন তিনি।
তিনি বলেন, এবছর চামড়ার দাম গতবারের চেয়েও অনেক কম। ভালো ও বড় আকারের চামড়ার দাম সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা।
আরেক চামড়া ব্যবসায়ী সুমন হোসেন বলেন, গরুর চামড়া ৩০০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে। আমি ১৮টি চামড়া কিনেছি।
চামড়া ব্যবসায়ী সোহেল আহমেদ বলেন, আমি ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা দরে ৫৬টি চামড়া কিনেছি। এগুলো পাইকারি ৬০০ টাকা দরে বিক্রি করতে হয়েছে। এতে প্রায় চার হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। চামড়ার দাম সিন্ডিকেট করে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। নাহলে সরকারের নির্ধারিত দামে চামড়া কিনলে আরও বেশি দাম পাওয়ার কথা।
চামড়া ব্যবসায়ী ও হাইড অ্যান্ড স্কিন ডিলার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান নওয়াব হোসেন বলেন, এবার চামড়ার দাম গতবারের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। সরকার চামড়ার যে দাম নির্ধারণ করেছে, সেটি ঠিক হয়নি। ভালো দাম না পাওয়ায় এবারও অনেক চামড়া পচে-গলে নষ্ট হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, আমাদের এবারের লক্ষ্যমাত্রা গরু, ছাগল, মহিষ মিলিয়ে মোট ৮৫ লাখ চামড়া সংগ্রহ করা। ট্যানারি মালিকরা সবসময় লবণযুক্ত চামড়া কেনেন। তবে, ঈদের সময় তিন থেকে পাঁচ শতাংশ রক্তযুক্ত কাঁচা চামড়া কেনা হয়। সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম কমিয়ে দেওয়া হয়েছে- এ অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এ অভিযোগ তো আজকের না। গত বিশ বছর ধরে একই অভিযোগ করা হচ্ছে আমাদের বিরুদ্ধে। ঢাকা শহরে এক লাখ লোক চামড়া কেনেন। এ এক লাখ লোককে কে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে? এটা সম্ভব নয়। সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম বাড়ানো-কমানো যায় না।
এদিন ধানমন্ডির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে চামড়া কেনাবেচায় একই ধরণের দৃশ্য দেখা যায়। অনেকেই চামড়ার দাম কম হওয়ায় বিক্রি না করে বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় দান করে দিয়েছেন।