হরিয়ানায় কৃষক বিক্ষোভ সামাল দিতে পানি কামান, কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ, মুখ্যমন্ত্রীর সভা বাতিল
অনলাইন ডেস্ক – ভারতের বিজেপিশাসিত হরিয়ানার কারনালে প্রতিবাদী কৃষকদের বিক্ষোভের জেরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা মনোহর লাল খাট্টারের নির্ধারিত সভা বাতিল করা হয়েছে। ওই ঘটনায় পুলিশকে প্রতিবাদকারী কৃষকদের সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপের পাশাপাশি পানি কামান ব্যবহার করতে হয়। আজ (রোববার) ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
‘আজতক’ হিন্দি টিভি চ্যানেল জানিয়েছে, কারনাল জেলার কাইমলা গ্রামে বিজেপি’র পক্ষ থেকে কৃষকদের বোঝানোর উদ্দেশ্যে কিষাণ মহাপঞ্চায়েতে কিষাণ সংবাদ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। এখানে, হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টার কৃষকদের সাথে কথা বলতে এবং তাদের জন্য নয়া কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের সুবিধা সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগে, কৃষি আইনের বিরোধিতা করা কয়েকশো কৃষক সেখানে পৌঁছন। ওই কৃষকরা সেখানে ‘কালো পতাকা’ প্রদর্শন করেন এবং মুখ্যমন্ত্রী খাট্টারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
এ সময়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা ক্ষুব্ধ কৃষকদের বুঝিয়ে সুঝিয়ে ছত্রভঙ্গ করার জন্য চেষ্টা করে। কিন্তু কৃষকরা তাতে রাজি হননি। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় অবশেষে পুলিশ কৃষকদের বিরুদ্ধে পানি কামান ব্যবহারসহ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। ওই ঘটনার পরে, কৃষকরা আশেপাশের গ্রামগুলোতে চলে যান। ঘটনাস্থলে প্রচুর পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
অন্যদিকে, প্রতিবাদী কৃষকরা মুখ্যমন্ত্রীর জন্য নির্মিত মঞ্চে ব্যাপক ভাঙচুর করেন। আন্দোলনকারী কৃষকরা চেয়ার, টেবিল ভেঙে ফেলেন। একইসঙ্গে প্রচুর কৃষক মুখ্যমন্ত্রীর হেলিপ্যাডে ভিড় জমান। এরফলে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টারটি সেখানে অবতরণ করতে পারেনি। কারনালে ওই ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টার আজকের নির্ধারিত সফর বাতিল করতে বাধ্য হন।
এব্যাপারে কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিং সূর্যেওয়ালা বলেছেন, ‘মনোহর লাল জী, কারনালের কাইমলা গ্রামের কৃষক মহাপঞ্চায়েতের ভান বন্ধ করুন। অন্নদাতাদের অনুভূতি এবং আবেগের সাথে খেলা করে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা খারাপ করার ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন। আপনি যদি যোগাযোগই করতে চান তবে গত ৪৬ দিন ধরে ধর্না-অবস্থানে থাকা অন্নদাতা কৃষকদের সঙ্গে করুন।’
কেন্দ্রীয় সরকারের তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে রাজধানী দিল্লি সংলগ্ন বিভিন্ন রাজ্যের সীমান্তে কৃষকরা একটানা দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে ধর্না-অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন। বেশ কয়েকবার সরকার পক্ষ ও কৃষক নেতাদের মধ্যে বৈঠক হলেও এখনও সমাধান সূত্র বেরোয়নি।
পার্সটুডে
