প্রথম মনোনয়নেই সেরা চিত্রগ্রাহক জেমস ফ্রেণ্ডের হাতে উঠলো অস্কার

চোখধাঁধানো অস্কারের ৯৫তম আসরে সেরা চিত্রগ্রাহকের পুরস্কার অর্জন করলেন জেমস ফ্রেন্ড। জার্মানি ছবি ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’ এর জন্য এই পুরস্কার পেলেন তিনি। দারিউস কন্ডজি (বার্দো, ফলস ক্রনিকল অব অ্যা হ্যান্ডফুল অব ট্রুথস),  ম্যান্ডি ওয়াকার (এলভিস),  রজার ডিকিন্স (এম্পায়ার অব লাইট) ও ফ্লোরিয়ান হফমেইস্টার (টার )- এর মতো চিত্রগ্রাহকদের মাড়িয়ে সেরা চিত্রগ্রাহকের পুরস্কার ছিনিয়ে নেয়াকে জীবনের বড় অর্জন বললেন জেমস।

মঞ্চে উঠে এসে উচ্ছ্বসিত জেমস অস্কার হাতে নিজের বাবা-মায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, সিনেমার মতো সার্কাসে তাকে যেতে দেয়ায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। ক্যারিয়ারের এই সফলতার পেছনে তাদের অবদানই সবচেয়ে বেশি। কারণ তারা বিশ্বাস রেখেছিলেন।

চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে অভিজাত পুরষ্কার অস্কার। লস অ্যাঞ্জেলসের ডলবি থিয়েটারে ২৩টি শাখায় পুরস্কার বিতরণের আয়োজন শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের সময় ১২ মার্চ রাত ৮টায় (বাংলাদেশ সময় ১৩ মার্চ ভোর ৬টা )। এবারের অস্কার সঞ্চালনা করেন জিমি কিমেল।

এদিকে এই প্রথমবারের মত ভারতে এল অস্কার, গোটা বিশ্বকে হারিয়ে পুরস্কার জিতল ‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারাস। শৌনক সেনের তথ্যচিত্র অস্কার আনতে পারেনি। তাতে কী? ভারতের হয়ে প্রথম অস্কারটি জিতে নিল তথ্যচিত্র ‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’। ‘সেরা ডকুমেন্ট্রি শর্ট’ বিভাগে পুরস্কার জিতল এই ছবি।

মনোনীত হয়েছিল, ‘হাউল আউট’, ‘হাও ডু ইউ মেজার এ ইয়ার’, ‘দ্য মারথা মিশেল এফেক্ট’ ও ‘স্ট্রেঞ্জার অ্যাট দ্য গেট’ এই ছবিগুলিও। তবে সবাইকে ছাপিয়ে সেরার সেরা ‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’। তথ্যচিত্রটির পরিচালক কার্তিকি গঞ্জালভিজ। প্রযোজক গুনিত মঙ্গা। এক অনাথ হাতির গল্প বলে এই ছোট ছবি। তার নাম রঘু। রঘুকে দেখাশোনা করে বোমান ও বেল্লি। পশু ও মানুষের বন্ধুত্ব শুধু নয়, এ ছবি যেন বিদেশের মাটিতে তুলে ধরে ভারতের সৃষ্টি, কৃষ্টি আর ভালবাসা। ২০২২ সালে ছবিটি মুক্তি পায় ওটিটিতে। দেখা যাচ্ছে নেটফ্লিক্সে।

ওদিকে অস্কার পেয়ে আপ্লুত প্রযোজক গুনিত মঙ্গা টুইটে লেখেন, “ভারতীয় প্রযোজক হিসেবে এই প্রথম কেউ অস্কার পেল। দুজন নারীর জয় এটা। এখন কাঁপছি।” প্রযোজক গুনিত ও পরিচালিক কার্তিকি দু’জনেই নারী। শুভেচ্ছা উপচে পড়েছে তাদের টুইটে। এখন পালা ‘আরআরআর’-এর।

একাডেমি অ্যাওয়ার্ড বা অস্কার পুরস্কারের কথা উঠলেই প্রথমেই যে দৃশ্যটি কল্পনায় আসা তা হচ্ছে বাহারি পোশাকে লাল গালিয়া তারকাদের উপস্থিতি। অবাক ব্যাপার হচ্ছে এবার অস্কারে সেই লাল গালিচাই নেই। ৬২ বছরের ঐতিহ্য ভাঙলো। এবার লালের জায়গা নিচ্ছে নীল শ্যাম্পেন রঙ। গোটা বিশ্বের তারকারা হেঁটে যাবেন শ্যাম্পেন রঙের কার্পেটের উপর দিয়ে।

সঞ্চালক জিমি কিমেল জানান, ‘এ বছর লাল রঙের কার্পেটের বদলে শ্যাম্পেন রঙের কার্পেট পাতা হবে। এতেই প্রমাণিত হয়, আমরা কতটা আত্মবিশ্বাসী যে এই বছর কোনোরকম রক্তপাত হবে না।’ গতবছর অস্কারে বিতর্কিত চড়কাণ্ডের দিকে ইঙ্গিত করে ব্যঙ্গাত্মক এই মন্তব্য করেন কিমেল।

গত বছর অস্কারের মঞ্চে বহুল বিতর্কিত সেই চড়কাণ্ড ঘটেছিল। স্ত্রী জাডা পিঙ্কেট স্মিথের মাথার চুল নিয়ে ঠাট্টা করায় সঞ্চালক ক্রিস রককে থাপ্পড় মেরেছিলেন উইল স্মিথ। সেই প্রসঙ্গ টেনেই এ বছরের সঞ্চালকের কৌতুক করে বললেন, লালগালিচা এবার থাকছে না। এবার কোনো লাল রঙ বা বিতর্কিত কাণ্ড চায় না অস্কার।

এ বছর লাল গালিচা পরিত্যাগ করে একটি হালকা রঙের গালিচা করার পরামর্শটি দিয়েছেন অস্কারের একজন পরামর্শদাতা এবং ভোগ ম্যাগাজিনের কন্ট্রিবিউটর লিসা লাভ এবং নিউ ইয়র্ক মেট গালার ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর রাউল অ্যাভিলা। লাল রঙের তুলনায় শ্যাম্পেন রঙ চোখে কিছুটা আরাম দেবে বলে ধারণা উদ্যোক্তাদের। তা ছাড়া আবহাওয়ার পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে একটি কমলা রঙের তাঁবু খাটানো হবে অতিথিদের জন্য। সেক্ষেত্রে দুটি রং পাশাপাশি সুন্দর লাগবে। তাছাড়া ছবি তোলার জন্য তারকাদের পোশাকের সঙ্গেও এই রং মানানসই বলে মনে করেন আয়োজকরা।

এনবিএস/ওডে/সি

news