প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বরখাস্তে ইসরায়েলে প্রতিবাদের ঝড়, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ

 সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা ও তা পরিবর্তনের দাবি করায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্টকে বরখাস্ত করেন। এই বরখাস্তের সিদ্ধান্তে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে গোটা ইসরাইলে।

এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট বলেছে, ইসরাইলের বিষয়টি নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেছে, যতদ্রুত সম্ভব একটি সমঝোতার পথ তৈরি করতে হবে। বিবৃতিতে হোয়াইট হাউজ বলেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গভীর সম্পর্কের স্বার্থেই, ইসরাইলে পূর্বের মতোই গনতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখতে হবে। বড় ধরণের কোনো পরিবর্তন আনতে হলে অবশ্যই জনগনের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে।’   
    
বিচার বিভাগীয় পদ্ধতির সংস্করনে সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল এখন অনেকটাই অচল হয়ে পড়েছে। সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সারাদেশে প্রায় ১২ সপ্তাহ আগে থেকেই বিক্ষোভ-সমাবেশ চলছিল। গালান্ট সিদ্ধান্তকে বিতর্কিত ও ভুল আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবি করেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। প্রধানমন্ত্রী তা মেনে না নিয়ে উল্টো গালান্টকেই বরখাস্ত করেন। ফলে সেই বিক্ষোভের মাত্রা আরো বেড়ে গেছে।

জেরুজালেম ও তেল আবিবের রাস্তায় রাস্তায় হাজার হাজার লোকজন মন্ত্রীকে বরখাস্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভে নেমে পড়ে। জেরুজালেমে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভকারীদের পিছু হটাতে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা জলকামান ব্যবহার করে।

বিচার বিভাগে নতুন আইন প্রনয়ণের পর গত এক সপ্তাহে বিক্ষোভ অনেক বেড়েছে। নতুন আইন বাস্তবায়ন হলে বিচারক নিয়োগ দানকারী সংস্থার উপর সরকারের পুরো নিয়ন্ত্রণ চলে আসবে।

নেতানিয়াহু এমনিতেই একটা দূর্নীতির মামলায় বিচারের মুখোমুখি রয়েছেন, সেখানে বিচার বিভাগের সংস্কার ও মন্ত্রী বরখাস্ত নিয়ে বেকায়দাতেই পড়েছেন তিনি।

এর আগে নেতানিয়াহু বলেন, বিচার বিভাগ যাতে করে ক্ষমতার অপব্যবহার করতে না পারে, সে জন্যই আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, জনগন কিন্তু গত নির্বাচনে তাদেরকে ম্যান্ডেট দেয় ইতিবাচক পরিবর্তনের আশায়।

প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভকারীরা জাতীয় পতাকা উড়াচ্ছিল, তাদের কেউ কেউ পাত্র ও প্যান ছুঁড়ে মারে পুলিশ ও সেনা সদস্যদের দিকে। বেকায়দায় পড়ে তারা ইসরাইলি পার্লামেন্ট নেসেটের দিকে পালিয়ে যায়।

গালান্ট মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার আগে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি কয়েক সপ্তাহ ধরে বিচার বিভাগের সংস্কার এবং এর বিরোধিতা নিয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেন। এরপরই তিনি আইন সংস্কারের সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য শনিবার প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানান। সেইসঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে এটাও বলেন যে, ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীতে অনেকেই ক্ষুব্ধ আইন সংস্কার নিয়ে।

এনবিএস/ওডে/সি

news