ডিওডোরেন্ট শোঁকার নেশা! সোশ্যাল মিডিয়ার আজব ট্রেন্ডে প্রাণ গেল ১৩ বছরের কিশোরীর

সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয় ট্রেন্ডিং থাকে। কখনও ভাইরাল গানের তালে পা মিলিয়ে ভিডিও পোস্ট, তো কখনও অদ্ভুত খাবার চেখে দেখা। সব ট্রেন্ডই যে সব সময় অনুকরণ করার মতো তা নয়। বরং এমন অনেক ‘ট্রেন্ডিং’ জিনিস রয়েছে, যা অনুসরণ কিংবা অনুকরণ করতে গেলে বিপদ ঘটাও বিচিত্র নয়। সম্প্ৰতি অস্ট্রেলিয়াতে ডিওডোরেন্ট শোঁকার ট্রেন্ড চালু হয়েছিল

। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও হাজার হাজার নেটিজেন তাতেই মজেছিলেন। কিন্তু ভাইরাল এই ট্রেন্ডই প্রাণ কাড়ল এক কিশোরীর।
ডিওডোরেন্ট সুগন্ধী হিসেবে শরীরে কিংবা পোশাকে স্প্রে করা হয়। যাঁরা ব্যবহার করেন, তাঁরা সকলেই জানেন, জিনিসটি খাওয়া কিংবা শোঁকার জন্য নয়। স্প্রে বোতলের গায়েও বড় বড় করে লেখা থাকে সেকথা। কিন্তু সেই সতর্কীকরণ না মেনেই সহজে নেশা করার জন্য নেটিজেনদের অনেকেই ডিওডোরেন্ট শুঁকতে শুরু করেছিলেন, তাঁদের দাবি, এতে নাকি খুব তাড়াতাড়ি নেশাচ্ছন্ন হওয়া যায়।

‘ক্রোমিং‘নামে অস্ট্রেলিয়ার সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রতি ট্রেন্ডিং হয়ে গিয়েছিল বিষয়টি।
সেই ট্রেন্ড ফলো করতে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে এস্রা হায়নেস নামে ১৩ বছরের এক কিশোরীর।
জানা গেছে, বন্ধুদের সঙ্গে থাকার সময় ক্রোমিং করবে বলে স্থির করে এস্রা। একটি ডিওডোরেন্টের বোতল থেকে রাসায়নিক শুঁকতে শুরু করে সে। এরপরেই প্রথমে তার হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যায়। তারপর তার মস্তিস্কও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় কিশোরীকে যখন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন চিকিৎসকদের আর কিছু করার ছিল না। তাও ৮ দিন লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু চিকিৎসকরা যখন জানিয়ে দেন, কিশোরীর সুস্থ হওয়ার আশা নেই, তখন একপ্রকার বাধ্য হয়েই লাইফ সাপোর্ট সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তে সম্মতি দেন কিশোরীর বাবা-মা।

সূত্রের খবর, অত্যন্ত সাধারণ রাসায়নিক ব্যবহারেই নেশা হওয়ায় অস্ট্রেলিয়ায় তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ক্রমশই জনপ্রিয়তা বাড়ছে ক্রোমিং-এর। বিশেষজ্ঞদের দাবি, সাধারণ রাসায়নিক হলেও ডিওডোরেন্ট শোঁকার নেশা প্রাণঘাতীও হতে পারে। এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি করতে পারে। এমনকী, কোনও জিনিস শেখার ক্ষমতা, বুদ্ধির বিকাশ, স্মৃতিশক্তিও ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে বলে দাবি তাঁদের।
তবে এস্রাই প্রথম নয়, যার মৃত্যু হয়েছে ক্রোমিং-এর কারণে। ২০১৯ সালে ১৬ বছরের দুই কিশোরের মৃত্যু হয়েছিল এই অদ্ভুত নেশার কারণে। আরও এক কিশোরীর মস্তিষ্ক স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও এই ট্রেন্ড কমার বদলে ক্রমশ বেড়েই চলেছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগের বলেই দাবি চিকিৎসকদের।সূত্র: এশিয়া নেট নিউজ বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news