যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা—ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর প্রশ্ন উঠেছে, তেহরান কীভাবে জবাব দেবে। আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের সামনে প্রতিক্রিয়ার একাধিক কৌশলগত বিকল্প রয়েছে। তবে কোনো পদক্ষেপই সহজ নয়।

সমকালীন যুদ্ধনীতি বিশেষজ্ঞ জ্যাঁ-মার্ক রিকলি বলেন, ইরানের প্রথম বিকল্প হতে পারে প্রতিক্রিয়া জানানো থেকে বিরত থাকা। কিন্তু এটি দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং আন্তর্জাতিক মহলেও দুর্বলতার বার্তা দেবে। দ্বিতীয় বিকল্প হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ বা সম্পদের ওপর সীমিত পাল্টা আঘাতের সম্ভাবনার কথা বলেন।

আল–জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রিকলি বলেন, ‘সম্ভবত ইরান এমন একটি কৌশল বেছে নেবে, যা এই দুই চরম অবস্থার মাঝামাঝি থাকবে। কারণ তারা চায় না, আমেরিকা পুরোপুরি সামরিকভাবে যুক্ত হয়ে পড়ুক। সেটা হলে ইরানের পক্ষে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।’

উদাহরণ হিসেবে তিনি ২০২০ সালের কাসেম সোলাইমানি হত্যার প্রতিশোধে ইরাকের আইন আল-আসাদ ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা উল্লেখ করেন, যেখানে আগাম সতর্কতা দিয়ে সীমিত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল তেহরান।

এরই মধ্যে ইরানের পার্লামেন্ট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালি সাময়িকভাবে বন্ধের অনুমোদন দিয়েছে। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে তা বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে বড় ধাক্কা আনতে পারে। এখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ।

বিশ্লেষকদের মতে, ইরান এমন প্রতিক্রিয়ার পথ বেছে নিতে পারে, যা প্রতিপক্ষকে বার্তা দেবে—তবে যুদ্ধ নয়, কৌশলে টিকে থাকার প্রয়াসই হবে মূল লক্ষ্য।

news