একটি ইহুদিবাদী সংবাদপত্র ইয়েদিওথ আহরোনোথ জানিয়েছে যে গাজা উপত্যকার সীমান্তে অর্ধ বিলিয়ন ডলার প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে একটি বিশাল সামরিক ঘাঁটি নির্মাণের পরিকল্পনা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
ইসরায়েলি সূত্রগুলো এই বিষয়ে অবগত জানিয়ে সংবাদপত্রটি লিখেছে, এই আমেরিকান ঘাঁটিটি ভবিষ্যতে যুদ্ধবিরতি বজায় রাখার জন্য এই অঞ্চলে মোতায়েন করা আন্তর্জাতিক বাহিনীর ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হবে এবং এখানে হাজার হাজার সৈন্য থাকার ব্যবস্থা করা হবে।
ইয়েদিওথ আহরোনোথের তথ্যমতে, আমেরিকানরা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই ঘাঁটি নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা ও সেনাবাহিনীর সাথে আলোচনা করছে এবং সম্ভাব্য স্থান নির্বাচনের কাজও শুরু করেছে।
হামাসের কড়া হুঁশিয়ারি: ‘বিকল্প দখলদারিত্ব’ বরদাস্ত করা হবে না!
তবে, ইসরায়েলি নিরাপত্তা সূত্রগুলো ইহুদিবাদী সংবাদ-সূত্র "শুমিরিম"-এর সঙ্গে আলোচনায় এই ঘাঁটি প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, এটি গাজায় এবং ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি সংঘাতে আমেরিকান হস্তক্ষেপের মাত্রা তুলে ধরছে। শুমিরিম মনে করে, মার্কিন সরকার ইসরায়েলের সঙ্গে সমন্বয় ছাড়াই এই ঘাঁটির কাজ এগিয়ে নিতে পারে।
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, গাজায় সেনা-ঘাঁটি নির্মাণের এই পদক্ষেপটি এক দখলদারিত্বের পরিবর্তে অন্য দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার প্রতীক। তাদের মতে, এটি কেবল ইসরায়েলিদের বদলে বিদেশীদের দিয়ে গাজাকে নিয়ন্ত্রণ করার শামিল মাত্র।
নভেম্বরের শুরুর দিকে, গাজার হামাস প্রতিরোধ আন্দোলনের সিনিয়র নেতা মুসা আবু মারজুক স্পষ্ট করে দেন যে, এই গোষ্ঠীটি কখনই এই ধরনের 'বিকল্প দখলদারিত্বের ব্যবস্থা' সহ্য করবে না।
গাজায় ‘আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী’-এর খসড়া প্রস্তাব
এর আগে, ওয়াশিংটন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি খসড়া প্রস্তাব প্রচার করেছিল, যেখানে গাজায় কমপক্ষে দুই বছরের জন্য একটি তথাকথিত "আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, কাতার এবং মিশরের সেনাদের নিয়ে গঠিত এই বাহিনী গাজার পুনর্গঠন ও নিরাপত্তার অজুহাতে কাজ করবে। একই সাথে, তাদের মূল লক্ষ্য থাকবে কার্যকরভাবে গাজার "নিরস্ত্রীকরণ" নিশ্চিত করা এবং প্রতিরোধের অবকাঠামো ভেঙে ফেলা।
আমেরিকান সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস-এর মতে, আইএসএফ পরিকল্পনাটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০-দফা প্রস্তাবের প্রথম ধাপের অংশ, যা তিনি গাজায় "যুদ্ধের অবসান" ঘটাবে বলে দাবি করেন। তবে সমালোচকরা যুক্তি দিয়েছেন যে প্রস্তাবটি ইসরায়েলি দখলদারিত্ব, যুদ্ধাপরাধের জন্য জবাবদিহিতা এবং ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ক্ষতিপূরণের অধিকারের মতো মূল বিষয়গুলোকে উপেক্ষা করছে।
সিনিয়র হামাস নেতা আবু মারজুক আরও জানান যে, ওয়াশিংটন এবং তেল আবিব এই ধরনের মিশনের জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদনের কর্তৃত্ব দেওয়ার বিরোধিতা করেছে।
