ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি-র নৌবাহিনী পারস্য উপসাগরে এক বিশাল সামরিক মহড়া শুরু করেছে। এই মহড়ায় তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এআই–সমৃদ্ধ উন্নত প্রতিরক্ষা ও আক্রমণ সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে। এটি এই অঞ্চলে উপস্থিত মার্কিন নৌযানগুলোর প্রতি স্পষ্ট সতর্কবার্তাও বটে।
মহড়ার লক্ষ্য ও প্রস্তুতি থেকে শুরু হওয়া এই মহড়ায় আইআরজিসি নৌবাহিনী তাদের গোয়েন্দা প্রস্তুতি, সামরিক সক্ষমতা এবং যেকোনো হুমকির মোকাবিলায় দৃঢ় প্রতিরোধের মনোভাব তুলে ধরেছে।
এআই-সমৃদ্ধ আধুনিক ব্যবস্থা: মহড়ায় নবাব, মাজিদ, মিসাঘসহ অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে। ইলেকট্রনিক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এসব সিস্টেম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে খুব অল্প সময়ে আকাশ ও নৌ-লক্ষ্য শনাক্ত করে উচ্চ নির্ভুলতায় আঘাত হানতে সক্ষম।
মহড়ার এলাকা: ‘শহীদ মোহাম্মদ নাজেরি’ কোডনামের এই মহড়াটি পারস্য উপসাগর, নাজেয়াত সামুদ্রিক অঞ্চল—আবু মুসা, গ্রেটার টুম্ব, লেসার টুম্ব, সিরি দ্বীপপুঞ্জ—হরমুজ প্রণালি এবং ওমান উপসাগরজুড়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শহীদ নাজেরি ছিলেন আইআরজিসি নৌবাহিনীর এলিট কমান্ডো ইউনিটের নেতা। তিনি ২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি ইরানের সমুদ্রসীমায় ঢুকে পড়া ১০ মার্কিন নৌসেনাকে আটক করার ঘটনায় বিশেষভাবে পরিচিত।
শত্রু শক্তির প্রতি বার্তা: এই মহড়ার মাধ্যমে ইরান প্রতিবেশী দেশগুলোর উদ্দেশে শান্তি ও বন্ধুত্বের বার্তা দিলেও, তারা শত্রু শক্তিকে স্পষ্ট সতর্কবার্তা দিয়েছে— যে কোনো ভুল পদক্ষেপের কঠোর জবাব দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, ১৯৮০-এর দশক থেকে পারস্য উপসাগর, ওমান উপসাগর ও হরমুজ প্রণালিতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর মধ্যে বারবার মুখোমুখি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ইরান প্রায়ই বৃহৎ মহড়া পরিচালনা করে তাদের সামরিক সক্ষমতা ও প্রতিরোধ ক্ষমতা দেখায়।
প্রতিরক্ষা সক্ষমতা নিয়ে মন্তব্য: এদিকে ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল আমির হাতামি বৃহস্পতিবার সংসদীয় কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে জানান— ইরান তার প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে ‘এক মুহূর্তও নষ্ট করেনি।’ তিনি বলেন, ইসলামিক ব্যবস্থার ক্ষতি মানে দেশের স্বাধীনতা ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার ক্ষতি। হাতামি উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের শত্রুতা ইসলামি বিপ্লবের শুরু থেকেই চলছে এবং সময়ের সঙ্গে আরও তীব্র হয়েছে।
