ঢাকা, শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১
Logo
logo

পালিয়ে বিয়ে করে নিয়েছে; এখন করণীয় কী?


এনবিএস ওয়েবডেস্ক     প্রকাশিত:  ১৩ মে, ২০২২, ০৩:০৫ পিএম

পালিয়ে বিয়ে করে নিয়েছে; এখন করণীয় কী?

পালিয়ে বিয়ে করে নিয়েছে; এখন করণীয় কী?

আসসালামু আলাইকুম। আমি কোনোভাবে একটি মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ হই। আবেগপ্রবণ হয়ে এক পর্যায়ে আমরা বিবাহের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পড়ি। উভয় পক্ষের পরিবারের অগোচরে বিবাহ করে ফেলি। আমার বয়স ১৮/১৯ বছর। বিষয়টি হাস্যকর হলেও এমনটা ঘটেছে। এমন অবস্থায় আমার করণীয় কি? এই ভুলের জন্য কি আল্লাহ পাক ক্ষমা করবেন? আমার এই বিবাহটি কি ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ? জনাব, আপনার কাছে এর উত্তর জানতে চাই।

এক. ইসলামি শরিয়তে বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য আবশ্যক ও ন্যূনতম শর্ত হলো, বিয়ের আকদের সময় সাক্ষী রাখতে হবে। সাক্ষী এমন দুইজন পুরুষ (স্বাধীন) সাক্ষী বা একজন পুরুষ (স্বাধীন) ও দুইজন মহিলা সাক্ষী হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল বলার উভয় বক্তব্য উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। (আদ-দুররুল মুখতার ৩/৯ ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/২৬৮)

সুতরাং উক্ত বিয়ে যদি বাস্তবেই দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক সমঝদার সাক্ষীর সামনে এভাবে করে থাকেন যে, একজন প্রস্তাব দিয়েছেন এবং অপরজন তা গ্রহণ করেছেন তাহলে আপনাদের উক্ত বিয়ে শুদ্ধ হয়ে গিয়েছে।

তবে অভিভাবককে গুরত্ব না দিয়ে আপনারা একটি মহা অন্যায় এবং অমানবিক ও অসামাজিক করেছেন, সুতরাং আল্লাহ তাআলার নিকট এই গুনাহর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবেন।

দুই. গোপন বিয়ে অমানবিক ও অসামাজিক হলেও যেহেতু করেই ফেলেছেন, এখন এই বন্ধন রক্ষা করতে হবে। মনে রাখতে হবে, এটি কোনো ছেলেখেলা নয় বরং এটি হলো, আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক প্রদত্ত ও নির্দেশিত নারী-পুরুষের সারাজীবনের একটি চিরস্থায়ী পূত-পবিত্র বন্ধন। ইসলামে তালাকের সুযোগ রাখা হয়েছে খুবই অপছন্দনীয়ভাবে। স্বামী-স্ত্রীর পারস্পারিক সম্পর্ক যখন তিক্ত পর্যায়ে চলে যায় এবং সমাধানের কোনো পথ থাকে না তখনই তালাক দেওয়া হয়ে থাকে। তারপরও ইসলামে তালাক একটি জঘন্যতম বৈধ কাজ। রাসূলুল্লাহ ﷺ তা চরমভাবে ঘৃণা করতেন। হাদীসে এসেছে,

أبغض الحلال عند الله الطلاق

‘আল্লাহর কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত হালাল–তালাক।’ (আবু দাউদ ২১৭৭)

সুতরাং প্রিয় ভাই, এখন যা করবেন তাহল, অস্বীকার করে অন্যায়ের পর অন্যায় আর নয়; বরং মা-বাবার সঙ্গে এ বিষয়ে খোলাখুলি আলোচনা করবেন। তাদের সঙ্গে অকৃতজ্ঞতাপূর্ণ আচরণ করেছেন, তা তাদের কাছে স্বীকার করে নিবেন। তারপর যা কিছু করবেন, পারিবারিকভাবেই করবেন। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, এর প্রতিকার হিসাবে তালাকের মত দূর্ঘটনা ঘটলে তা হবে আরেকটি অন্যায়।

والله أعلم بالصواب