ঢাকা, বুধবার, অক্টোবর ১৬, ২০২৪ | ১ কার্তিক ১৪৩১
Logo
logo

হানিয়া হত্যার জবাবে সরাসরি ইসরায়েলে হামলার নির্দেশ খামেনেয়ীর


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ০২ আগস্ট, ২০২৪, ০৪:০৮ পিএম

হানিয়া হত্যার জবাবে সরাসরি ইসরায়েলে হামলার নির্দেশ খামেনেয়ীর

হানিয়া হত্যার জবাবে সরাসরি ইসরায়েলে হামলার নির্দেশ খামেনেয়ীর

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ উজমা আলী খামেনেয়ী হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ার হত্যার প্রতিশোধ নিতে সরাসরি ইসরায়েলে হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। 

তেহরানে বুধবারে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করা হয়। এ হত্যার জন্যে ইসরায়েলকে দায়ী করছে ইরান। তবে ইসরায়েল এখনো এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি।

ইসরায়েলে সরাসরি হামলার বিষয়ে এনওয়াইটি’র এই প্রতিবেদন গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইসরায়েলও।

তিনজন অজ্ঞাতনামা ইরানি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি এই তথ্য সামনে এনেছে।

ওই তিন কর্মকর্তার মধ্যে দুইজন রেভোলিউশনারি গার্ড সদস্য। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হানিয়া হত্যাকাণ্ডের পর ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, হামাস প্রধান হানিয়া নিহত হয়েছেন বলে ইরান ঘোষণা দেওয়ার পরপরই খামেনেয়ী বুধবার সকালে ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের জরুরি বৈঠকে ইসরায়েলে হামলার নির্দেশ দেন। 

টানা প্রায় ১০ মাস ধরে গাজা উপত্যকায় হামাসের সাথে যুদ্ধ করছে ইসরায়েল। ইহুদিবাদী এই দেশটি অবশ্য ইরানের নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য তেহরানে যাওয়া হানিয়াকে হত্যার কথা স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটিই করেনি। যদিও ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানী এবং সামরিক কমাণ্ডারসহ বিদেশে ‘শত্রুদের’ হত্যা করার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে ইসরায়েলের।

গাজায় প্রায় ১০ মাসের চলমান এই ইসরায়েলি আগ্রাসনের সময়ে ইরান অনেকটা ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে। দুই দেশের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ এড়িয়ে এই অঞ্চলে তেহরানের মিত্র এবং প্রক্সি বাহিনীর মাধ্যমে তীব্রভাবে আক্রমণ বাড়ানোর মাধ্যমে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে ইরান।

অবশ্য ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে দশকের পর দশক ধরে শত্রুতার সম্পর্ক বজায় রয়েছে এবং গত কয়েক দশকের মধ্যে চলতি বছরের এপ্রিলে ইসরায়েলের ওপর সবচেয়ে বড় এবং স্পষ্ট আক্রমণ চালায় ইরান। সিরিয়ার দামেস্কে বেশ কয়েকজন ইরানি সামরিক কমাণ্ডারকে হত্যার পাশাপাশি দূতাবাস প্রাঙ্গণে ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে ঔ হামলা চালিয়েছিলো তেহরান।

আর এবার হানিয়া হত্যার জেরে সরাসরি ইসরায়েলে হামলার নির্দেশ দেওয়ার পর ইরানি কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘এটা এখনও স্পষ্ট নয়, ইরান ঠিক কতটা শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া জানাবে এবং দেশটি (গত এপ্রিলের মতো) আবারও তার আক্রমণকে আরও ক্রমবর্ধমান উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থা থেকে রক্ষা করার জন্য আরো সময় নেবে  কী না। ইরানের সামরিক কমান্ডার তেল আবিব এবং হাইফার আশপাশে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রের আক্রমণ করার কথা বিবেচনা করছেন, তবে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা এড়িয়ে তা হতে পারে।’

তারা জানিয়েছেন, এছাড়া পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটির কাছে বিবেচনাধীন আরেকটি বিকল্প হচ্ছে- ইরান এবং অন্যান্য ফ্রন্ট থেকে সমন্বিত আক্রমণ চালানো, অর্থাৎ ইয়েমেন, সিরিয়া এবং ইরাকসহ যেখানে ইরান-সংশ্লিষ্ট মিত্র বাহিনী রয়েছে।

ইরানি এই কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, ইরানের সমস্ত রাষ্ট্রীয় বিষয়ে খামেনেয়ীর কথাই শেষ কথা এবং তিনি দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়কও বটে। যুদ্ধ আরও প্রসারিত হলে এবং ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলা চালালে সেক্ষেত্রে আক্রমণ এবং প্রতিরক্ষা উভয় বিষয়েই পরিকল্পনা তৈরি করতে বিপ্লবী গার্ড এবং সেনাবাহিনীর সামরিক কমাণ্ডারদের নির্দেশও দিয়েছেন খামেনেয়ী।

এদিকে হানিয়ার মৃত্যু সম্পর্কে নিজের প্রকাশ্য বিবৃতিতে খামেনেয়ী ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইরান সরাসরি প্রতিশোধ নেবে। তিনি বলেছেন, আমরা তার রক্তের প্রতিশোধ নেওয়াটা আমাদের কর্তব্য হিসেবে দেখছি, কারণ এই ঘটনা ইরানের ভূখণ্ডে ঘটেছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েল তার ‘কঠোর শাস্তি’ পাওয়ার জন্য মঞ্চ তৈরি করেছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

এছাড়া নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, রেভোলিউশনারি গার্ডস এবং জাতিসংঘে ইরানের মিশনসহ অন্যান্য ইরানি কর্মকর্তারাও প্রকাশ্যে বলেছেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবে ইরান এবং সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে নিজেকে রক্ষা করার অধিকার রয়েছে তেহরানের।