ঢাকা, শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১
Logo
logo

ব্রা খোলো, হাতে নাও, বেরিয়ে যাও এখান থেকে!’ সেদিনের ধমক এখনও কানে বাজছে, ট্রমায় ছাত্রী


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ২০ জুলাই, ২০২২, ০৩:০৭ পিএম

ব্রা খোলো, হাতে নাও, বেরিয়ে যাও এখান থেকে!’ সেদিনের ধমক এখনও কানে বাজছে, ট্রমায় ছাত্রী

ব্রা খোলো, হাতে নাও, বেরিয়ে যাও এখান থেকে!’ সেদিনের ধমক এখনও কানে বাজছে, ট্রমায় ছাত্রী

কেরলের ব্রা খুলে (Removing Bra) নিট (NEET) পরীক্ষা দেওয়া কাণ্ডে এবার নিজের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা (Experience) শেয়ার (Share) করল এক পরীক্ষার্থী (Examinee)। এই বিষয়ে নিজের অভিজ্ঞতাকে এক কথায় ‘ভীষণ খারাপ অভিজ্ঞতা’ বলে বর্ণনা করেছে কোল্লামের ওই পড়ুয়া।

দেশজোড়া বিক্ষোভের মাঝেই ১৭ বছর বয়সি ওই কিশোরী জনিয়েছে, ওই পরীক্ষাকেন্দ্রে যখন স্ক্যান করা হচ্ছিল, তখন সেখানে দু’টি লাইন করা হয়েছিল। একটিতে সেই সব মেয়েদের দাঁড় করানো হয়েসছিল, যারা ধাতব হুক দেওয়া ব্রা পরেনি। অন্য লাইনে দাঁড় করানো হচ্ছিল বাকিদের।

‘আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়, আমি ধাতব হুক লাগানো ব্রা পরে আছি কিনা। আমি হ্যাঁ বলি। তখনই আমাকে দ্বিতীয় লাইনে দাঁড়াতে বলা হয়,’ জানিয়েছে ওই পরীক্ষার্থী।

সে তখন বুঝতেও পারেনি এরপর কী হতে চলেছে। ‘এরপর বলা হল, ব্রা খুলে টেবিলের উপর রাখতে। সেখানে সমস্ত ব্রা ডাঁই করে রাখা ছিল। আমরা জানি না, ফেরার সময়েও আমরা ওগুলো ফেরত পাব কিনা। যখন ফিরলাম, তখন সেখানে একগাদা লোকজন। তালগোল পাকানো ব্রা গুলোর মধ্যেও আমি নিজেরটা খুঁজে পেয়েছিলাম,’ বলতে বলতে কান্নায় গলা বুজে আসে ওই ছাত্রীর।

অনেকেই লজ্জায় কেঁদে ফেলেছিল। সহমর্মিতা তো দূর, উল্টে মহিলা নিরাপত্তাকর্মীরা অত্যন্ত রুক্ষভাবে তাদের প্রশ্ন করে,’ কাঁদছ কেন?’

ওই ছাত্রী আরও জনিয়েছে, ‘ওরা বলল, ব্রা নাও, বেরিয়ে যাও। পরার দরকার নেই। এই শুনে আমরা সাংঘাতিক বিব্রত বোধ করি। কিন্তু সবাইই ওগুলো পরবে বলে অপেক্ষা করছিল। ওখানে তখন অন্ধকার, আর জামা বদলানোর কোনও জায়গাও ছিল না। এটা একটা বীভৎস অভিজ্ঞতা! আমরা যখন পরীক্ষা দিচ্ছিলাম, তখন চাদরের অভাবে চুল দিয়ে স্তন ঢেকে রেখেছিলাম। ওখানে ছেলে, মেয়ে সকলেই ছিল। অত্যন্ত অস্বস্তিকর একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।’

সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষায় কেরলের একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে ছাত্রীদের ব্রা খুলে পরীক্ষায় বসতে বাধ্য করার এই ঘটনা আলোড়ন ফেলে দিয়েছে গোটা দেশে। ঘটনাটির কথা সামনে আসে, যখন অন্য এক পরীক্ষার্থীর বাবা এই নিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, অন্তত ৯০% মহিলা পরীক্ষার্থীকে ব্রা খুলতে বাধ্য করা হয়। এর জেরে মানসিক যন্ত্রনা এবং অপমানে তারা কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষা দিতে বাধ্য হয়েছে।

ওই অভিভাবক আরও জানান, অনেকেই ব্রা খুলে পরীক্ষা দিতে রাজি না হওয়ায় নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের সরাসরি প্রশ্ন করে, ‘ব্রা বড়, না ভবিষ্যৎ? জলদি খোলো, আমাদের সময় নষ্ট কোরো না।’

রবিবারের এই ঘটনায় তোলপাড় হয়ে ওঠে দেশ। প্রাথমিকভাবে এই অভিযোগকে ভুয়ো বলে উড়িয়ে দিলেও পরে একটি বিশেষ দল গঠন করে তাদের এই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি। জাতীয় মহিলা কমিশন এই ঘটনাকে মহিলাদের পক্ষে সম্মানহানিকর এবং ন্যাক্কারজনক আখ্যা দিয়েছে।

এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৫ জন মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।।খবর দ্য ওয়ালের /এনবিএস/২০২২/একে