এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর, ২০২৫, ০৫:১১ পিএম

তুরস্কের ফুটবলে এখন রীতিমতো ভূমিকম্প! অবৈধ জুয়াখেলার অভিযোগে দেশটির ফুটবলে চলছে তোলপাড়। ইস্তাম্বুলের একটি আদালতের নির্দেশে এরই মধ্যে ৬ জন তুর্কি রেফারিকে সাময়িকভাবে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
এছাড়াও বাজি বেটিং)এর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগে দেশের ১ হাজার ২৪ জন খেলোয়াড়কে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে টার্কিশ ফুটবল ফেডারেশন TFF। বার্তা সংস্থা এএফপি তুর্কি ফুটবল ফেডারেশনের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, যেসব খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে ফুটবলে বাজি ধরার প্রমাণ মিলেছে, তাদের সবাইকে পেশাদার ফুটবল শৃঙ্খলাবিধি বোর্ডে PFDK পাঠানো হয়েছে। এই বিশাল সংখ্যক ফুটবলারদের মধ্যে তুরস্কের শীর্ষ লিগের ২৭ জন খেলোয়াড় রয়েছেন।
দু'সপ্তাহের জন্য স্থগিত তৃতীয় ও চতুর্থ বিভাগের খেলা, ক্লাবগুলোর স্কোয়াডে ঘাটতি
এই বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণার পর TFF তাৎক্ষণিকভাবে তুরস্কের তৃতীয় ও চতুর্থ বিভাগের সব ম্যাচ দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে। তবে স্বস্তির খবর হলো, আপাতত শীর্ষ দুই বিভাগে খেলা চালু থাকবে।
বড় পরিসরে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ফলে ক্লাবগুলোর স্কোয়াডে মারাত্মক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে TFF বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার FIFA কাছে শীতকালীন ট্রান্সফার উইন্ডোতে অতিরিক্ত ১৫ দিন সময় চেয়েছে, যাতে ক্লাবগুলো দ্রুত নতুন খেলোয়াড় দলে আনতে পারে।
TFF জানিয়েছে, ম্যাচে বাজি ধরার অভিযোগে অভিযুক্ত ১ হাজার ২৪ ফুটবলারকে এরই মধ্যে শৃঙ্খলাবিষয়ক কমিটির সামনে তলব করা হয়েছে এবং তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার থেকে আটক থাকা আরও ১১ রেফারিকে গত সোমবার আদালতের তত্ত্বাবধানে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
কেমন জড়িত তুরস্কের ফুটবল তারকারা? বেসিকতাসের দাবি 'খেলোয়াড়রা নির্দোষ'
তুরস্কের অন্যতম বড় ক্লাব বেসিকতাস জানিয়েছে যে তাদেরও দুইজন ফুটবলারের নাম পিএফডিকে-এর তালিকায় রয়েছে। তবে এক বিবৃতিতে ক্লাব কর্তৃপক্ষ দৃঢ়ভাবে দাবি করেছে যে তারা 'নিজেদের খেলোয়াড়দের নির্দোষ বলে বিশ্বাস' করে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বাজি এবং ম্যাচ ফিক্সিং তদন্তের অংশ হিসেবে একজন ক্লাব চেয়ারম্যান সহ অন্তত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই একই তদন্তের অংশ হিসেবে ম্যাচ ফিক্সিং ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে প্রথম বিভাগের ক্লাব আয়ুপসপোরের সভাপতিকেও কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কোথা থেকে শুরু হলো কেলেঙ্কারি?
এই কেলেঙ্কারির সূত্রপাত হয় গত ২৭ অক্টোবর, যখন সভাপতি ইব্রাহিম হাজিওসমানওগলু এক বিস্ফোরক দাবি করেন। তিনি জানান, শত শত রেফারি বাজি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত। তার দাবি অনুযায়ী, তুরস্কের পেশাদার লিগে কর্মরত ৫৭১ জন রেফারির মধ্যে ৩৭১ জনেরই বাজির অ্যাকাউন্ট ছিল এবং ১৫২ জন সক্রিয়ভাবে বাজি ধরতেন।
অভিযুক্তদের মধ্যে শীর্ষ দুই বিভাগের ৭ জন প্রধান রেফারি ও ১৫ জন সহকারী রেফারি রয়েছেন। নিচের স্তরের লিগ থেকে আরও ৩৬ জন ‘ক্লাসিফাইড’ রেফারি ও ৯৪ জন সহকারী রেফারির নাম পাওয়া গেছে। বর্তমানে অভিযুক্ত ছয়জন পুলিশ হেফাজতে থাকা রেফারিই তৃতীয় ও চতুর্থ বিভাগের সহকারী রেফারি।