ঢাকা, বুধবার, নভেম্বর ১২, ২০২৫ | ২৮ কার্তিক ১৪৩২
Logo
logo

আইসিসির বড় সিদ্ধান্ত: বাতিল হলো দ্বি-স্তর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ, পিছিয়ে গেল নতুন যুগের ক্রিকেট স্বপ্ন


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ১২ নভেম্বর, ২০২৫, ০৫:১১ পিএম

আইসিসির বড় সিদ্ধান্ত: বাতিল হলো দ্বি-স্তর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ, পিছিয়ে গেল নতুন যুগের ক্রিকেট স্বপ্ন

বিশ্ব ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছিল—দ্বি-স্তরবিশিষ্ট টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চালুর পরিকল্পনা নিয়ে। কিন্তু এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নানা পর্যালোচনা ও বিতর্কের পরও অবশেষে সেটি বাস্তবায়ন হলো না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) আবারও বাতিল করল সেই দুই স্তরের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ধারণা।

দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত আইসিসির ত্রৈমাসিক সভায় রজার টুইসের নেতৃত্বে গঠিত ওয়ার্কিং গ্রুপ এই সুপারিশ জমা দেয়, যাতে বলা হয়—দ্বি-স্তর মডেল আপাতত বাস্তবায়নযোগ্য নয়।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, টেস্ট খেলুড়ে ১২ দেশকে দুটি বিভাগে ভাগ করা হতো। প্রথম বিভাগে থাকত ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা। আর দ্বিতীয় বিভাগে থাকত বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আফগানিস্তান, জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ড।

প্রতি চ্যাম্পিয়নশিপ শেষে পয়েন্ট টেবিলের ভিত্তিতে একটি বা দুটি দল উঠত প্রথম বিভাগে, আর একইভাবে একটি বা দুটি দল নেমে যেত দ্বিতীয় বিভাগে।

তবে আর্থিক দিক থেকে এই মডেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে স্পষ্ট কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। ধারণা করা হচ্ছিল, ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় বিভাগের দলগুলোকে অর্থসহায়তা দিতে পারে। কিন্তু আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত পুরো প্রস্তাবই বাতিল করা হয়।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলো সরাসরি এই মডেলের বিরোধিতা করে। তাদের মতে, দ্বিতীয় বিভাগে নামলে বড় দলের সঙ্গে খেলার সুযোগ কমে যাবে, এতে রাজস্ব ও প্রতিযোগিতা—দুই দিকেই ক্ষতি হবে।

অন্যদিকে, ‘বিগ থ্রি’—ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, অবনমিত হলে নিজেদের ব্র্যান্ড ও আয়ের ওপর বড় ধাক্কা আসতে পারে।

ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান রিচার্ড থম্পসন আগস্টে বলেন,
“আমরা যদি খারাপ সময় পার করি আর ডিভিশন টু-তে নেমে যাই, তাহলে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের সঙ্গে খেলতে পারব না—এটা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

বর্তমানে ২০২৫-২০২৭ চক্রে ৯টি দেশ অংশ নিচ্ছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে। ২০২৭ সালের জুলাই থেকে শুরু হওয়া নতুন চক্রে আফগানিস্তান, জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ডকে যুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ফলে টেস্টের মঞ্চে ফিরতে চলেছে সব ১২টি পূর্ণ সদস্য দেশ।

ওডিআই ও টি-টোয়েন্টি নিয়েও নতুন ভাবনা

আইসিসির সভায় ওয়ানডে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ২০২৩ বিশ্বকাপের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া ওয়ানডে সুপার লিগ পুনরায় চালুর প্রস্তাব উঠেছে, যা ২০২৮ সাল থেকে কার্যকর হতে পারে। এতে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে নতুন উদ্দীপনা ফিরবে বলে আশা করা হচ্ছে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ২০ দলের কাঠামো আপাতত অপরিবর্তিত থাকবে। তবে কিছু দেশ ভবিষ্যতে দলসংখ্যা বাড়ানোর দাবি তুলেছে। এছাড়া সহযোগী সদস্য দেশগুলো এমন একটি বৈশ্বিক কোয়ালিফায়ার টুর্নামেন্টের প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে পূর্ণ সদস্যরাও অংশ নিতে পারবে।

যদিও টি-১০ ক্রিকেট দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে, আইসিসি এখনই সেটিকে আনুষ্ঠানিক ফরম্যাট হিসেবে স্বীকৃতি দিতে রাজি নয়। এসব প্রস্তাব নিয়ে আগামী বছরের সভায় আবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।