যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অডিটে বড় ধরনের অনিয়ম ধরা পড়ায় প্রায় ১৭ হাজার অভিবাসীর বাণিজ্যিক ড্রাইভিং লাইসেন্স (সিডিএল) বাতিল করা হয়েছে। তদন্তে দেখা গেছে, এসব লাইসেন্স এমন অভিবাসীদের দেওয়া হয়েছিল যারা বর্তমানে আর যুক্তরাষ্ট্রে থাকার বৈধ অনুমতি রাখে না।

ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতি যখন আরও কঠোর হচ্ছে, ঠিক সেই সময় এই সিদ্ধান্ত নতুন রাজনৈতিক বিতর্ক ছড়িয়ে দিয়েছে।

মার্কিন পরিবহন বিভাগ জানিয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়ার কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন— লাইসেন্সগুলো ‘বেআইনিভাবে’ এমন বিদেশি ড্রাইভারদের দেওয়া হয়েছে যাদেরকে এখন ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট চালকদের জানানো হয়েছে, ৬০ দিনের মধ্যে তাদের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।

এর আগে গত আগস্টে বৈধ কাগজপত্র না থাকা এক ট্রাকচালক ফ্লোরিডায় তিনজনকে চাপা দিয়ে হত্যা করেন। সেই ঘটনার পর থেকেই ট্রাম্প প্রশাসন বাণিজ্যিক ট্রাক ও বাস চালনায় অনিয়মিত অভিবাসীদের সম্পৃক্ততা ঠেকাতে আরও কঠোর ও বিস্তৃত ব্যবস্থা নিতে শুরু করে।

তবে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম পুরো বিষয়টিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করেছেন।

ট্রাম্প প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরে ক্যালিফোর্নিয়াসহ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যকে সমালোচনা করে আসছে, যারা বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই থাকা ব্যক্তিদেরও ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে থাকে।

মার্কিন পরিবহনমন্ত্রী শন ডাফি বলেছেন, “এটা শুধু শুরু। ক্যালিফোর্নিয়ায় সেমি-ট্রাক বা স্কুলবাস চালাচ্ছেন— এমন প্রতিটি অনিয়মিত অভিবাসীকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।”

অন্যদিকে নিউজমের কার্যালয় দাবি করছে, যাদের লাইসেন্স বাতিল করা হচ্ছে, তারা লাইসেন্স নেওয়ার সময় বৈধ ফেডারেল ওয়ার্ক পারমিট রেখেছিলেন। এছাড়া নতুন নিয়মানুযায়ী এই বাতিলকরণ কার্যকর হলেও, ওই ১৭ হাজার লাইসেন্স নতুন নিয়ম কার্যকর হওয়ার আগেই দেওয়া হয়েছিল— তাই এগুলো নিয়ম ভঙ্গ করে না।

লজিস্টিকস প্রতিষ্ঠান ফ্রেমন্ট কনট্র্যাক্ট ক্যারিয়ারস এর তথ্য অনুযায়ী, ক্যালিফোর্নিয়ায় ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি ট্রাকচালক রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর ও দেশের সবচেয়ে বড় কৃষিভিত্তিক অর্থনীতি হওয়ায় এ অঙ্গরাজ্যে ট্রাকচালকের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই অনেক বেশি।