ঢাকা, শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০
Logo
logo

মোদীকে টিপ্পনির খেসারত দিতে হতে পারে কংগ্রেসকে, বলছে সমীক্ষা


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ২৭ নভেম্বর, ২০২২, ০২:১১ পিএম

মোদীকে টিপ্পনির খেসারত দিতে হতে পারে কংগ্রেসকে, বলছে সমীক্ষা

মোদীকে টিপ্পনির খেসারত দিতে হতে পারে কংগ্রেসকে, বলছে সমীক্ষা

 প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) গুজরাতের ভোটের প্রচারে কংগ্রেসকে (congress) আক্রমণ করতে গিয়ে রাজ্যবাসীর সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিটি সভায় প্রধানমন্ত্রী বলছেন, কংগ্রেস আমার পারিবারিক মর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। পদে পদে আমাকে অসম্মান, অপমান করছে। আমি সাধারণ পরিবারের মানুষ। এটাই কি আমার অপরাধ!

মোদীর এই প্রচারে কি সুফল মিলবে ভোটের বাক্সে? একটি সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেলের সদ্য করা সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, ৫৩ শতাংশ গুজরাতবাসী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর মান-মর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন তোলা মোটেই সঠিক কাজ হয়নি। ভোটের বাক্সে এর প্রতিক্রিয়া পড়বে।

তবে ৪৭ শতাংশ মানুষ আবার সেই সম্ভাবনা সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন। যদিও ভোট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে ৫৩ শতাংশ মানুষ কংগ্রেসের সমালোচনায় বিরক্ত বোধ করছেন তারা বিজেপির পক্ষে ভোট দিলে নির্বাচনী ফলাফলে বড় ধরনের ফারাক তৈরি হবে। বিজেপি গতবারের থেকে বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরতে পারে।

এই ভাবনা প্রধানমন্ত্রীকেও নাড়া দিয়েছে বলা চলে। যে কারণে তিনি প্রতিটি সভায় কংগ্রেসের আক্রমণ নিয়ে তিনি নিষ্ঠাভরে পুরনো কাসুন্দি ঘাটাঘাটি করছেন। বলেন, কখনও আমাকে বলা হয়েছে ‘মওত কি সওদাগর,’ কখনও তুলনা করা হয়েছে দুর্গন্ধময় নর্দমার সঙ্গে, কখনও জাত তুলে বলেছে আমি নিচু জাতির মানুষ। আর এবার বলা হয়েছে, আমাকে আমার পারিবারিক পরিচয় স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে।

মোদী বলেন, আমি আপনাদের সেবক। আমি মর্যাদা নিয়ে মাথা ঘামাই না। কিন্তু সেবকের কি সামাজিক, পারিবারিক প্রতিষ্ঠা থাকতে নেই?

প্রসঙ্গত, গত ১৭ নভেম্বর কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রবীণ নেতা মধুসূদন মিস্ত্রি বলেন, নরেন্দ্র মোদী নিজেকে সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল ভাবতে শুরু করেছেন। এবারের ভোটে আমরা তাঁকে বুঝিয়ে দেব তাঁর পারিবারিক ও সামাজিক অবস্থান কোথায়।

মিস্ত্রির এই বক্তব্য নিয়ে আগেই বিজেপি সরব হয়েছে। আজ মোদী ভাষণ জুড়ে নতুন পুরনো মিলিয়ে কংগ্রেসের দেওয়া সব গালমন্দ নিজেই মনে করিয়ে দেন শ্রোতাদের।

মধুসূদন মিস্ত্রি কংগেসের খুব বড় মাপের নেতা নন। তাছাড়া, গুজরাতের এবারের ভোটের প্রচারে কংগ্রেসের মূল কৌশল হল, মোদীকে আক্রমণ যথাসম্ভব এড়িয়ে যাওয়া। কংগ্রেসের এই কৌশলের পক্ষে দলের বক্তব্য, ভোট হচ্ছে গুজরাত বিধানসভার। সেখানে প্রধানমন্ত্রী রাজ্য চষে বেড়াচ্ছেন। তাঁকে আক্রমণ করা হলে বিজেপির কৌশল সফল হবে। কংগ্রেস তাই ঠিক করেছে, যথাসম্ভব রাজ্য সরকার এবং রাজ্য বিজেপিকে নিশানা করা হবে। সেই মতোই প্রচার চলছিল। কিন্তু আচমকাই মিস্ত্রির মন্তব্যকে হাতিয়ার করেছেন মোদী ও তাঁর দল।

২৯১৪-র লোকসভা ভোটের প্রচারে নিজেকে চা-ওয়ালা বলে পরিচয় দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি ওবিসি পরিবারভুক্ত, বিজেপি সেই তথ্যও তুলে ধরে বারে বারে।

এবার গুজরাতের প্রচারে মোদী বলছেন, আমি সাধারণ পরিবার থেকে এসেছি। বিরোধীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার পারিবারিক, সামাজিক অবস্থান, মর্যাদা নিয়ে লড়াই না করে আসুন উন্নয়ন নিয়ে কথা বলি। আসুন আরও উন্নত গুজরাত গড়ে তোলার শপথ গ্রহণ করি।

গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে বিতর্কে মোদীকে মওত কি সওদাগর বলেছিলেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী। তিনি তখন দলের সভাপতি। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সনিয়া গুজরাতে প্রচারে যাবেন। তার আগে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সম্পর্কে সনিয়ার মন্তব্য ভোটারদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করলেন। ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্ট গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে মোদীকে চূড়ান্ত ক্লিনচিট দিয়েছে।

মোদী সম্পর্কে নিচ মন্তব্য করেছিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মণিশঙ্কর আইয়ার। কংগ্রেস নেতা পরে ব্যাখ্যা দেন তিনি বলতে চেয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নিচু মানসিকতার মানুষ। কিন্তু বিজেপি অভিযোগ করে কংগ্রেস নেতা প্রধানমন্ত্রীকে নিচু জাতির মানুষ বলে ও অবমাননা করেছেন। এই ঘটনা পাঁচ বছর আগে ২০১৭-র গুজরাত বিধানসভার ভোটের সময়কার। এখন দেখার এবার মিস্ত্রির বক্তব্য নিয়ে বিজেপি প্রকৃতই কতটা লাভবান হয়।
খবর দ্য ওয়ালের /এনবিএস/২০২২/একে