ঢাকা, শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১
Logo
logo

গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইরানের সাবেক পদস্থ কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ডদেশ


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ১৩ জানুয়ারী, ২০২৩, ১২:০১ এএম

গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইরানের সাবেক পদস্থ কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ডদেশ

গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইরানের সাবেক পদস্থ কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ডদেশ

ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই৬-এর পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগে ইরানের সাবেক উপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলীরেজা আকবারির বিরুদ্ধে মৃতুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে একটি ইরানি আদালত। ‘বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির’ অভিযোগে আকবারিকে গ্রেফতারের পর তার আইনজীবীর উপস্থিতিতে তার বিচার প্রক্রিয়া চলে এবং ‘অকাট্য সাক্ষ্য-প্রমাণের’ ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।

ইরানের বিচার বিভাগের বার্তা সংস্থা মিজান নিউজ বুধবার জানিয়েছে, নিম্ন আদালতের দেয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছে ইরানের সুপ্রিম কোর্ট। আকবারি অতীতে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর উচ্চ সরকারি পদে দায়িত্ব পালন করায় তার বিচার প্রক্রিয়ায় গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়। তবে সুপ্রিম কোর্ট তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখার পর গতকাল (বুধবার) ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে মামলার বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, আকবারি একজন প্রভাবশালী গুপ্তচর হিসেবে ইরানের স্পর্শকাতর ও কৌশলগত কেন্দ্রগুলোতে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই৬-এর পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি করেন।দীর্ঘ সময় ধরে কয়েক স্তরের তদন্ত প্রক্রিয়া শেষে তাকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়ায় ‘কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স’ এবং ‘ধোঁকা দেয়ার কৌশল’ প্রয়োগ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, আকবারির বিরুদ্ধে ফাঁদ পেতে রাখার পর বহুবার তিনি ইরানের স্পর্শকাতর বিভিন্ন সরকারি সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্য ‘ইরানের শত্রু দেশের’ গোয়েন্দা সংস্থার হাতে তুলে দেন।

গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, আকবারি একবার তেহরানস্থ ব্রিটিশ দূতাবাসে ভিসা সংগ্রহ করার কূটনৈতিক মিশনে গিয়ে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থার কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এছাড়া, তিনি ইরানের সরকারি দায়িত্বে একাধিকবার ইউরোপ সফরে গিয়ে এমআই৬-এর ‘পূর্ণ মাত্রার কর্মচারী’ হিসেবে কাজ করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, আকবারির অগোচরেই ইরানের কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স বাহিনী একাধিকবার তার সঙ্গে এমআই৬-এর যোগাযোগ ব্যবস্থায় ঢুকে পড়ে এবং এ সময় তাকে পাতানো তথ্য সরবরাহ করা হয়।এসব তথ্য-প্রমাণ হস্তগত হওয়ার পর আদালতের নির্দেশে সাবেক এই উপ প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়।

গোয়েন্দা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, যদিও কুচক্রি বিটিশ সরকার আকবারির ব্যক্তিগত দুর্বলতার সুযোগে তাকে নিয়োগ দিয়েছিল কিন্তু তারা নিশ্চিতভাবে একথা জানতে পারেনি যে, তারা আকবারির কাছ থেকে যেসব তথ্য পেয়েছে তার কতটুকু সঠিক আর কতটুকু সাজানো।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম টেলিগ্রাফের বরাত দিয়ে ইরানের ইংরেজি নিউজ চ্যানেল প্রেসটিভি জানিয়েছে, আলীরেজা আকবারির মৃত্যুদণ্ড সম্পর্কে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে তারা ইরানি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, “আমরা তার আশু মুক্তি কামনা করছি এবং এ বিষয়ে আলাপ করার জন্য তেহরানের কাছে কনস্যুলার সুবিধার আবেদন জানিয়েছি।”

ইরানে ব্রিটিশ সরকারের গুপ্তচরবৃত্তি করার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ১৯৫৩ সালে ইরানে এক সাজানো অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মোহাম্মাদ মোসাদ্দেক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার কাজে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিল।
খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২৩/একে