ঢাকা, Sun, September 21, 2025 | 5 October 1432
Logo
logo

নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৯:০৯ পিএম

নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু

নেপালে আবারও রাজপথে নামল জেন-জি আন্দোলনের তরুণরা। অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কির পদত্যাগের দাবিতে রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানী কাঠমান্ডুর বালুওয়াটার এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনের সামনে জড়ো হয় আন্দোলনকারীদের একটি শক্তিশালী অংশ।

মন্ত্রিসভা নিয়োগ নিয়ে ক্ষোভ

তরুণদের আইকন সুদান গুরুংয়ের নেতৃত্বে আয়োজিত এ বিক্ষোভ শুরু হয় মন্ত্রিসভার সদস্য নিয়োগ নিয়ে ক্ষোভ থেকে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ—গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় বণ্টনের আগে তাদের মতামত নেওয়া হয়নি। অথচ জেন-জি আন্দোলনের চাপেই কার্কি প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হয়েছেন।

নেপালের জনপ্রিয় ডিজিটাল ম্যাগাজিন সেতোপতির বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিয়ে স্পষ্ট ভাষায় কার্কির পদত্যাগ দাবি করেছেন। তাদের বক্তব্য, “আমাদের আন্দোলনের কারণেই এই সরকার—তাহলে সিদ্ধান্তের সময় আমাদের পরামর্শ কেন নেওয়া হলো না?”

নিহতদের পরিবারের উপস্থিতি

বিক্ষোভস্থলে উপস্থিত ছিলেন সম্প্রতি আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যরাও। তাদের উপস্থিতিতে উত্তেজনা আরও বাড়ে। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে দ্রুত বিচার ও দায়ীদের শাস্তির দাবি তোলা হয়।

গুরুং হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “তরুণদের উদ্বেগ যদি উপেক্ষা করা হয়, আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে নামব। চাইলে যেখান থেকে তুলেছি, সেখান থেকেই এই সরকারকে নামিয়ে আনব।”

বিতর্কিত নিয়োগে অস্থিরতা বাড়ছে

রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বেড়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে ওম প্রকাশ আরিয়ালের নিয়োগে। গুরুং ও বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ তুলেছেন, আরিয়াল ভেতরের প্রভাব খাটিয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করেছেন। শান্তি-নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত এই মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ এখন জনমতের কেন্দ্রে।

এছাড়া সুশীলা কার্কি শপথের পর বিচারের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা নিয়ে জনমনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

জেন-জি আন্দোলন বনাম অন্তর্বর্তী সরকার

কার্কিকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছিল জেন-জি আন্দোলনের দাবির মুখে। তিনি নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন, সংসদ ভেঙে নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। পরে তিনি ওম প্রকাশ আরিয়ালকে স্বরাষ্ট্র ও আইন, রমেশ্বর খানালকে অর্থ এবং কুলমান ঘিসিংকে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন। কিন্তু এই নিয়োগেই তরুণ সমাজ ক্ষুব্ধ হয়েছে।

সামনে কী অপেক্ষা করছে নেপালের রাজনীতিতে?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জেন-জি আন্দোলন ও অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বন্দ্ব যদি দ্রুত সমাধান না হয়, তবে নেপালের রাজনীতি আরও অনিশ্চিত হয়ে উঠবে।

একদিকে তরুণদের বিক্ষোভ তীব্র হতে পারে, অন্যদিকে সরকারও কঠোর অবস্থান নিতে পারে—যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনগণের দাবি পূরণ ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার একমাত্র পথ হলো সংলাপ ও সমঝোতা। তা না হলে নেপালের রাজনীতিতে আবারও বড় ঝড় বয়ে যেতে পারে।