ঢাকা, Sun, September 21, 2025 | 5 October 1432
Logo
logo

গাজা যুদ্ধ নিয়ে বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি, ইসরায়েলকে বহু বছরের বিচ্ছিন্নতার হুমকি দিলেন নেতানিয়াহু


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৯:০৯ পিএম

গাজা যুদ্ধ নিয়ে বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি, ইসরায়েলকে বহু বছরের বিচ্ছিন্নতার হুমকি দিলেন নেতানিয়াহু

গাজায় প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের জেরে বিশ্বব্যাপী সমালোচনা তুঙ্গে। এ অবস্থায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সতর্ক করে জানিয়েছেন, দেশটি এমন এক ধরনের “দীর্ঘস্থায়ী বিচ্ছিন্নতা”র মুখোমুখি হচ্ছে যা বছরের পর বছর টিকে থাকতে পারে। তার দাবি, এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের সামনে নিজের পায়ে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েলের অর্থনীতিকে আরও স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে এবং বাইরের বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। তিনি স্বীকার করেন, এই বিচ্ছিন্নতার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়তে পারে অস্ত্র শিল্পে, যেখানে বিদেশি অস্ত্র আমদানির পরিবর্তে নিজেদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। তার ভাষায়,

“আমাদের নিজস্ব অস্ত্র শিল্প বিকাশ করতেই হবে। আগামী বছরগুলোতে এই বিচ্ছিন্নতার মোকাবিলায় আমাদের এথেন্স আর সুপার স্পার্টা— দুটোই হতে হবে।”

আন্তর্জাতিক চাপ ও যুদ্ধের সমালোচনা

গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত আক্রমণের কারণে দেশটি এখন ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ইতালি ও নেদারল্যান্ডসের মতো দেশগুলোর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মুখে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনো কোনো বিধিনিষেধ দেয়নি, বরং আগের প্রশাসনের স্থগিত করা বোমার চালান দ্রুত অনুমোদন করেছে।

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল গাজার পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করলেও নেতানিয়াহু পিছু হটছেন না। সমালোচকরা বলছেন, এই যুদ্ধ শুধু জিম্মিদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছে না, বরং ইসরায়েলের অর্থনীতিকেও ভয়াবহ চাপে ফেলছে।

ইসরায়েলের ভেতরেও তীব্র বিরোধিতা

বিরোধী নেতা ইয়ার ল্যাপিড নেতানিয়াহুর বক্তব্যকে “পাগলামী” আখ্যা দিয়ে বলেছেন, “বিচ্ছিন্নতা কোনো ভাগ্য নয়; এটি তার ব্যর্থ নীতির ফল।” সাবেক সেনাপ্রধান গাদি আইজেনকোটও সতর্ক করেছেন, “জিম্মিদের ত্যাগ করে এবং বিশ্বকে ইসরায়েল থেকে দূরে ঠেলে দেওয়ার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার দ্বিতীয় সুযোগ আর আসবে না।”

নেতানিয়াহুর পাল্টা জবাব

সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, ইসরায়েলের শেয়ারবাজার বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালীদের মধ্যে একটি। তিনি বলেন, “ইসরায়েলে বিনিয়োগ করা বুদ্ধিমানের কাজ। আমরা অস্ত্র উৎপাদনে বিনিয়োগ বাড়াতে থাকব এবং দুর্বল ইউরোপীয় নেতাদের ওপর নির্ভর করব না।”

অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচও প্রধানমন্ত্রীর সুরে সুর মিলিয়ে বলেন, যুদ্ধ চললেও শেয়ার বাজার বাড়ছে এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

কূটনৈতিক প্রেক্ষাপট

এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে বৈঠকে নেতানিয়াহু ইসরায়েল-আমেরিকার সম্পর্কের দৃঢ়তার কথা তুলে ধরেন। তারা একসঙ্গে সমালোচনা করেন ফ্রান্স, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোর, যারা জাতিসংঘে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।