বুলগেরিয়ার আন্তর্জাতিক গোল্ডেন ফেমি চলচ্চিত্র উৎসবে ‘কাঠ গোলাপ’

ইউরোপিয় ইউনিয়ন (ইই্উ) ভুক্ত বলকান অঞ্চলীয় দেশ বুলগেরিয়ার রাজধানী সোফিয়ায় শুরু হতে যাচ্ছে ‘দ্যা গোল্ডেন ফেমি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’। এই ফেস্টিভ্যালে নিমন্ত্রিত হয়েছে ড্রিমল্যান্ড এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারে মো. ফরমান আলী প্রযোজিত এবং সাজ্জাদ খান পরিচালিত ‘কাঠ গোলাপ’। ছবিটি বুলগেরিয়ার আন্তর্জাতিক এই চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। 

আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে এমন ছবি সচরাচর এখন আর তেমন একটা  নির্মিত হয় না। এর অন্যতম কারণ বিনিয়োগ। চলচ্চিত্রের ভাষা প্রয়োগে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের মানদণ্ড বজায় রেখে চলচ্চিত্র নির্মাণের যে মেধা ও অর্থের প্রয়োজন তার যোগানদাতা কে হবেন। যারা নিজ অর্থে এ ধরনের ছবি নির্মাণ করেন তারাও নানা জটিলতায় গুটিয়ে যান। 
ইউরোপকে বলা হয়, শিল্পচর্চার বড় ধরনের আধার। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর ১৫০টি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এসব উৎসবে নানা ক্যাটেগরির চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে পুরস্কৃত হয়ে থাকে। এর মধ্যে পর্তুগাল এবং ইংল্যান্ডে তিনটি উৎসব অনুষ্ঠিত হয় ‘স্পেশাল ইন্টারেস্ট’ নামে। ইউরোপের তিনটি আন্তর্জাতিক উৎসব সহ মর্যাদাপূর্ণ উৎসবগুলো হলো ভেনিস, কান এবং বার্লিন, টরন্টো, সানডান্স। এগুলোকে বিগ ফাইভও বলা হয়। কাঠ গোলাপ হয়তো বিগ ফাইভে যুক্ত হতে পারেনি। কিন্তু শিল্পচর্চার বড় আধারে প্রবেশ করার সুযোগ পেয়েছে। 

কাঠ গোলাপ ছবির বিষয়বস্তু বেশ চমৎকার এবং ব্যতিক্রমী ধারার। এসেক্সসুয়ালিটি নিয়ে ছবিটি নির্মিত হয়েছে। বিষয় বৈচিত্র্যই দর্শক ও শিল্পবোদ্ধাদের আকর্ষণ করে। এজন্য ছবিটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমাদৃত হয়েছে। ইতোমধ্যে ছবিটি একাধিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়ে প্রশংসাও কুড়িয়েছে। চলচ্চিত্র মূলত শিল্পমাধ্যম, যার অবস্থান সমাজের উপরিকাঠামোতে। এখানেই হয়ে থাকে শিল্প-সাহিত্যের চর্চা। একটি চলচ্চিত্র বা একটি উপন্যাস বা যে কোনো সৃজনশীল কাজ ভোক্তাদের সমাজ পরিবর্তনের ডাক দেয় না। ভোক্তাদের মনোবৃত্তিকে সুকুমার করে তোলে। একটি ছবি দেখে দর্শক হয়তো ভাবে এবং ভাবনা তৈরি করতে পারার মধ্যেই ছবিটির সাফল্য। সমাজের উপরিকাঠামো সমৃদ্ধ হয় শিল্প-সাহিত্যের বৈশিষ্ঠ্যমণ্ডিত সৃজনশীলতায়। নন্দনতত্ত্বের নিরিখে যা সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অবদান রাখে এবং পরিশীলিত করে সাংস্কৃতিক আবহকে। 

বিষয় বৈচিত্র্য, নির্মাণশৈলী এবং চিত্রনাট্যের সামঞ্জস্যপূর্ণ অন্তপ্রবাহ একটি ছবিকে নান্দনিক বিচারে সার্থক করে তোলে। যেহেতু কাঠ গোলাপ এখনো দেশের মানুষ দেখতে পারেননি এবং ছবিটির মূল তাৎপর্যের রসও আস্বাদন করতে পারেননি, সেহেতু ছবিটি নিয়ে বাকচাতুর্যের কোনো অবকাশ নেই। তবে আশা করা বাতুলতা হবে না যে, শুধু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের দর্শক নয়, দেশের দর্শকও শিগগিরই ছবিটি দেখতে পাবেন। 

ছবিটির প্রদর্শনী উপলক্ষে প্রযোজক মো. ফরমান আলী মে মাসে বুলগেরিয়া যাচ্ছেন। ১ জুন সোফিয়ার বলকান প্যালেসে পুরস্কার প্রদান করা হবে। ‘কাঠগোলাপ’ সিনেমাটির কাহিনি ও চিত্রনাট্য রচনা করেছেন অপূর্ণ রুবেল। সিনেমাটির প্রধান চারটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়িকা কেয়া, রাশেদ মামুন অপু, মেঘলা মুক্তা ও দিলরুবা দোয়েল । এছাড়া এতে অন্যান্য চরিত্রে আছেন এ কে আজাদ সেতু, জামশেদ শামীম, কুন্তল বুকি, শিল্পী সরকার অপু, সুজন হাবিব প্রমুখ।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news