দুটি বার্লিন উৎসবে ইরান কারাগারের নির্যাতন নিয়ে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী

শনিবার এ উৎসবে দেশটির পরিচালক মেহরান তামাদন তার নির্মিত চলচ্চিত্রটিতে মূলত দেখিয়েছেন ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর বর্তমানে দেশটির কারাগারে বন্দীদের উপর কি ধরনের নির্যাতন করা হচ্ছে। তিন ভুক্তভোগীর জবানবন্দির উপর ভিত্তি করে একটি সাক্ষাৎকারের মধ্যদিয়ে তা তুলে ধরেন তিনি।

রয়টার্সকে তিনি জানান, আমি নিশ্চিত আজ রাতেও কেউ না কেউ এরকম অভিজ্ঞতার শিকার হচ্ছেন।

চলচ্চিত্রটিতে দেখা যায়, প্যারিসের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে কাঠের তৈরি জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষ বানিয়ে সাক্ষাতকারটি ধারণ করেন তামাদন।
নির্যাতনের শিকার এক ভুক্তভোগী জানান, কারালাভের আগে তিনি ভিডিও যন্ত্রাংশের ব্যবসা করতেন। পরে তাকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনে বন্দী করে সরকার। কারাগারে তার পায়ের সঙ্গে বৈদ্যুতিক তার জড়িয়ে রাখা হত  আর এমনভাবে মুখ ও চামড়ায় বিষ প্রয়োগ করতেন কারারক্ষীরা যেন মনে হত চামড়া পুড়ে যাচ্ছে। এসময় তার হাতগুলো শরীরের সঙ্গে ভাজ করে রাখা থাকত।  

আরেক নির্যাতিতা সাংবাদিক তাঘি রাহমানি তার বর্ণনায় বলেন, আমাকে ব্যাপকহারে প্রহার করে কারা পুলিশ। আর সেলগুলো এতটাই ছোট যে একজনের পক্ষেই থাকা দুষ্কর। এমন সংকীর্ন সেলেই তার প্রাত্যাহিক প্রাকৃতিক কাজও সারতে হত। এর আগেও বহুবার কারালাভ করেছেন বলেও জানান রাহমানি।    

পরিচালক তামাদন বলেন, এটি নির্মাণের উদ্দেশ্য বর্তমানে ইরানের কারারক্ষীরা কতটা নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিচ্ছে তা উন্মোচন করা। পাশাপাশি  কারাবন্দীরা যেন আয়নায় তাদের নিজেদের দেখতে পায় সেটি তুলে ধরাও আমার আরেকটি উদ্দেশ্য ছিল।

২০২১ সালেও ১৬টি ভিডিও ক্লিপ সম্বলিত ‘ এই পরিচালকের আরকটি প্রামাণ্যচিত্র এভিন কারাগার’ (এভিন বিশ্ববিদ্যালয়) বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। এটি প্রদর্শনের পর অ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল কারাবন্দীদের নির্যাতন বন্ধে আবেদনও করে দেশটির কাছে।

ইরানের কারা প্রধান মেহদি হজ-মোহাম্মদি এক টুইটে লিখেন, বিষয়গুলো অপ্রত্যাশিত। কিন্ত আমি ভেবে পাচ্ছিনা এ চলচ্চিত্র দেখে দর্শকদের কি উপকার হবে। আমরা কোন প্রামাণ্যচিত্রে সহিংসতার দৃশ্য দেখাতে পারিনা। পরিচালক এমনভাবে টেবিল উল্টিয়ে ভীতির সঙ্গে প্রশ্ন করছিলেন যেন তারা সবাই ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের এজেন্ট।

এনবিএস/ওডে/সি

news