প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকে কংগ্রেসের সভানেত্রী করার প্রস্তাব মাঝেমধ্যেই ঘুরে ফিরে আসে। রাজস্থানের উদয়পুরে সদ্য সমাপ্ত চিন্তন শিবিরে কংগ্রেসের অনেক নেতাই তাঁকে (Priyanka Gandhi) সভাপতি করতে ফের সরব হন। এবার তাঁকে সংসদে পাঠানোর প্রস্তাব নিয়ে জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে। আগামী মাসে রাজ্যসভার আসনগুলির নির্বাচনে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকে প্রার্থী করার প্রস্তাব নিয়ে জোর আলোচনা চলছে কংগ্রেসের অন্দরে। সনিয়া কন্যা এতদিন পর্যন্ত কোনও নির্বাচনেই প্রার্থী হননি। ফলে সংসদে যাওয়ার সুযোগই আসেনি তাঁর কাছে।

আগামী মাসে বেশ কয়েকটি রাজ্যের সঙ্গে কর্ণাটকে রাজ্যসভার চারটি আসন শূন্য হতে চলেছে। রাজ্যসভায় মেয়াদ শেষ হচ্ছে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ, বিজেপি নেতা কেসি রামমূর্তি, কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ ও অস্কার ফার্নান্ডেজের আসনটি। অস্কার মারা যাওয়ায় আগেই শূন্য হয়েছে আসনটি। ১০ জুন ওই আসনগুলিতে ভোট নেওয়া হবে।

সূত্রের খবর, কর্ণাটক প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ডিকে শিবকুমার চাইছেন একটি টিকিটে প্রিয়ঙ্কাকে (Priyanka Gandhi) রাজ্যসভায় পাঠাতে। আগামী বছরের গোড়ায় কর্ণাটক বিধানসভায় ভোট। শিবকুমার ও তাঁর অনুগামীরা মনে করছেন, প্রিয়াঙ্কার দক্ষিণের রাজ্যগুলিতেও সময় দেওয়া দরকার। গত মার্চে পাঁচ রাজ্যের ভোটে কংগ্রেস সুবিধা করতে না পারলেও প্রচারে প্রিয়াঙ্কার দাপট ছিল দেখার মতো। উত্তরপ্রদেশে মাটি কামড়ে পড়েছিলেন মাস চারেক। কিন্তু বিজেপির ধর্ম ও জাতপাতের রাজনীতির জোড়া ধাক্কায় সুবিধা করতে পারেননি।

শিবকুমার স্বীকার করেছেন, তিনি প্রিয়াঙ্কাকে প্রার্থী করা নিয়ে বিরোধী দলনেতা সিদ্ধারামাইয়ার সঙ্গে তাঁর এক দফা কথা হয়েছে। আরও কথা হবে। তিনি ইঙ্গিত দেন, কংগ্রেসের নিশ্চিত দুটি আসন থেকে রাজ্যসভায় যেতে অনেকেই আগ্রহী। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেস কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে না। বিভিন্ন জনের নাম নিয়ে প্রস্তাব কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব হাইকমান্ডের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

চিন্তন শিবির থেকে কংগ্রেস ‘এক পরিবার-এক প্রার্থী’ নীতি বলবৎ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই মাপকাঠিতে প্রিয়ঙ্কার (Priyanka Gandhi) প্রার্থী হতে বাধা নেই। প্রথমত, তিনি পাঁচ বছরের বেশি সময় কংগ্রেসে ২৪ ঘণ্টার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। দ্বিতীয়ত, তিনি এখন আর খাতায় কলমে গান্ধী পরিবারের সদস্য নন।

এখন প্রশ্ন হল, সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীরা কি প্রিয়ঙ্কাকে কর্ণাটক থেকে রাজ্যসভায় পাঠানোর প্রস্তাবে সায় দেবেন? রাহুল নিজে কেরল থেকে সাংসদ। উত্তরপ্রদেশে রায়বেরলি ও আমেথি ছিল গান্ধী পরিবারের রাজনৈতিক জমিদারি। আমেথি অনেক আগেই হাতছাড়া। রায়বরেলি থেকে সনিয়া এখনও সাংসদ। কিন্তু বিধানসভা ভোটে ওই লোকসভার অন্তর্গত সব ক’টি বিধানসভা আসনই বিজেপি দখল নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাহুলের পর প্রিয়ঙ্কাও দক্ষিণের কোনও রাজ্য থেকে সাংসদ হলে উত্তরপ্রদেশ-সহ উত্তর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক অনেকটাই ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। প্রিয়ঙ্কা (Priyanka Gandhi) এখনও উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক।

দ্বিতীয়ত, গান্ধী পরিবারের কেউই রাজ্যসভা দিয়ে সংসদ যাত্রা শুরু করেননি। লোকসভায় লড়াই করে সংসদে গিয়েছেন। প্রিয়াঙ্কাকে কংগ্রেস যেভাবে লড়াকু নেত্রী হিসাবে তুলে ধরতে চাইছে তার সঙ্গে রাজ্যসভায় প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্তকে মেলানো কঠিন। মাস তিনেক আগে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে বরং প্রিয়ঙ্কাকে (Priyanka Gandhi) কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তিনি শেষ পর্যন্ত রাজি হননি। খবর দ্য ওয়ালের

news