সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের অনেক স্কলারশিপ বন্ধ করেছে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়


ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারকে নিশানা করে বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার ভীষণ হিংসুটে। সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের অনেক স্কলারশিপ বন্ধ করে দিয়েছে।

তিনি আজ (মঙ্গলবার) মালদহে সরকারি পরিসেবা প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময়ে ওই মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে তিনি নাগরিকত্ব প্রদান ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করেন। মতুয়া সম্প্রদায়ের পাশে রাজ্য সরকারই বরাবর  ছিল এবং তাদের যাবতীয় উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান।

মমতা আজ বলেন, ‘আমি জানি না এই কেন্দ্রীয় শাসক দলটা কেন ভীষণ হিংসুটে!  আমাদের এখানে ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু জনসংখ্যা আছে। সেটা তো তাদের অপরাধ নয়। তারা যদি পড়াশোনা করতে চায়, আমাদের কী উচিত না  তাদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করা। না কী একটা উঁইপোকা কামড়ালেও এজেন্সি পাঠিয়ে দিয়ে তাদের গ্রেফতার করা? কোনটা কাজ? আমি মনে করি তাদের পড়াশোনায় এগিয়ে দেওয়াটা আমাদের কাজ, যাতে তারা নিজের পায়ে দাড়াতে পারে। মনে রাখবেন কেন্দ্রীয় সরকার সংখ্যালঘুদের স্কলারশিপ অনেক বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু আমরা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ ছেলে মেয়েকে স্কলারশিপ দিচ্ছি।’ 

কেন্দ্রীয় সরকারের তৈরি করা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রসঙ্গে মমতা বলেন, কীসের নাগরিক? বিশেষ করে মতুয়া সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, ‘এতদিন আপানারা এখানে বেঁচে নেই? খাদ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা পান? স্বাস্থ্যসাথী সুবিধা  পান? লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পান? বিনা পয়সায় রেশন পান? ভোট দেন? আপনারা যদি নাগরিক না হতেন, ভোটটা দিতেন কী করে? সম্পূর্ণটা বিভ্রান্তিকর।’ 

কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৯ সালে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা ‘সিএএ’/ক্যা’তে    মুসলিমদের বাদ দিয়ে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু এতদিনেও বিতর্কিত ওই আইনের বিধি তৈরি না হওয়ায় তা এখনও কার্যকর হয়নি।

পশ্চিমবঙ্গে একটা বড় অংশের নাগরিক বিশেষ করে মতুয়া সম্প্রদায়কে বিজেপি নেতারা বরাবরই নাগরিকত্ব প্রদানের কথা বলে আসছেন। আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেন। মমতা আজ বলেন, ‘বিজেপি নির্বাচন এলে মতুয়া বাড়িতে ভাত খেয়ে বলবে, আমি মতুয়াদের বন্ধু হয়ে গেলাম! ক্যা-ক্যা করে চিৎকার করবে। ওদের বলুন, ক্যা-ক্যা করার জন্য কাক আছে। তুমি কেন ক্যা-ক্যা করছ? (জাতীয় নাগরিক পঞ্জি) ‘এনআরসি’র নামে সবাইকে জেলে বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা! (সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন) ‘ক্যা’র নামে মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে’ বলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন।
খবর পার্সটুডে/ এনবিএস/ ২০২৩/একে

news