বই মানুষের জীবনের অনিঃশেষ প্রেরণার উৎস: রবি উপাচার্য

একুশে বইমেলা উদযাপন পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত মাসব্যাপী একুশে বইমেলার উদ্বোধন করেছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজম।

শনিবার সন্ধ্যায় পাবনা টাউন হল মাঠে এ মেলার উদ্বোধন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহান জাতীয় সংসদের মাননীয় ডেপুটিস্পিকার  এ্যাড. শামসুল হক টুকু এম. পি।

উদ্বোধনকালে উপাচার্য বলেন, বই বলতে আমরা সাদা চোখে দেখি দুটি মলাটের মধ্যে কিছু মুদ্রণ, এই মুদ্রণ হচ্ছে কিছু অভিজ্ঞতা, মানুষ তাদের  জীবনের অর্জিত জ্ঞান অভিজ্ঞতাগুলো যখন দু-মলাটের মধ্যে বদ্ধ করে মুদ্রণ করেন তখন সেটাকে আমরা বই বলি। উপাচার্য দার্শনিক দেকার্তকে উদ্ধৃত করে বলেন, 'বই পড়া মানে অতীতের একজন মনীষীর সাথে আলাপ করা।' বইকে টিকিয়ে রাখতে হবে এবং বই থেকে অনুপ্রেরণা নিতে হবে। বইয়ের মধ্যে একটি মানুষের দর্শন, অভিজ্ঞতা, আবেগ ও অনুভূতিকে পাওয়া যায়।

বই এবং লাইব্রেরীকে ধ্বংস করা মানবতা বিরোধী কাজ। বই কিভাবে বিপ্লব ও মানবতার বার্তা দেয়, মৈত্রীর বন্ধন তৈরি করে এবং এক মানুষ থেকে অন্য মানুষের মধ্যে দার্শনিক বিনিময় ঘটায় এ বিষয়টি আমাদের পূর্বের লেখক, সাহিত্যিক ও দার্শনিকদের কাছ থেকে আমরা শুনেছি এবং বইয়ের অসীম ক্ষমতা আমরা দেখেছি। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আচরণ চর্চা করলে আমরা দেখতে পাই তিনি যখন জেলে যেতেন তার সঙ্গে বই নিয়ে যেতেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা সঞ্চয়িতা ও গীতবিতান।

বিপদে, সংকটে বই মানুষের জীবনের অনিঃশেষ  প্রেরণার উৎস। একটি  বই পড়া এক  অর্থে একজন লেখকের  সঙ্গে নিভৃত আলাপ করার মতো । তিনি বলেন, বই হচ্ছে জ্ঞানের বাহন। তিনি ফরাসি সাহিত্যিক আনাতোল ফ্রাঁসকে উদ্ধৃত করে বলেন, ' আমি যখন বই পড়ি এবং অন্য একজন মানুষের অভিজ্ঞতা নেই তখন আমার হৃদয়ের আরো একটি চোখ উন্মোচিত হয়'। আমরা বই পড়ার মাধ্যমে আমাদের হৃদয়ের অসংখ্য চোখকে উন্মোচিত করতে পারি। বই একজন ব্যক্তিকে সাহসী করে, অনুপ্রাণিত করে এবং একটা পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। বই পড়ার কোন বিকল্প হতে পারে না। তিনি বই পড়ার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ তৈরি করা এবং যে স্বপ্ন বাস্তবায়নের দায়িত্ব বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নিয়েছেন তা বাস্তবায়ন করার জন্য তরুণ প্রজন্মকে আহ্বান জানান।

বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক কমিটির সভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কমরেড জাকির হোসেন, স্বাগত বক্তব্য রাখেন লেখক, কলামিস্ট  হাবিবুর রহমান স্বপন, এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পাবনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়রসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানে  স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায়  মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক আয়োজন বিপুলসংখ্যক দর্শক-শ্রোতা উপভোগ করেন।

এনবিএস/ওডে/সি

news