তুরস্কে ভূমিকম্প বিধ্বস্ত অঞ্চলে বন্যায় ১৪ জনের মৃত্যু

তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ক্ষত না শুকাতেই বিধ্বস্ত এলাকায় মারাত্মক বন্যা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার রাত থেকে প্রবল বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট বন্যায় তলিয়ে গেছে দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অসংখ্য ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান। এতে অন্তত ১৪ জন প্রাণহারিয়েছেন এবং নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে।

বিধ্বস্ত আদিয়ামান ও সানলিউরফা প্রদেশের ক্ষতিগ্রস্ত লোকেরা তাবু ও কন্টেইনারে বাস করছেন। বন্যায় তাদের অস্থায়ী আবাসগুলো তলিয়ে গেছে। ্আদিয়ামানের টুট জেলায় কন্টেইনার তলিয়ে একজন প্রাণ হারান। জেলাটির মেয়র সোলায়মান কিহচ একথা জানান।

বন্যায় তাবু ও কন্টেইনার ডুবে ভূমিকম্প থেকে বেঁচে যাওয়া লোকদের দুর্ভোগ আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। লোকদেরকে বন্যা কবলিত অস্থায়ী তাবু শহর থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ডুবুরি ও দমকল কর্মীরা সেখানে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন। উদ্ধারকাজে নিয়োজিত নিখোঁজ দু’জন দমকল কর্মীকে পরে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সোলায়মান সয়হু বলেন যে, বন্যা নিহতদের মধ্যে দেড় বছর বয়েসি একটি শিশুও রয়েছে। ভারি বৃষ্টিতে সানলিউরফা ইয়ুবিয়ে ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) প্লাবিত হয়েছে। এ কারণে সেখানকার রোগীদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এ ছাড়া, সানলিউরফার আবিদে কোপ্রলু জংশনের কাছে বন্যার কারণে অন্তত ছয়জন আটকে থাকার খবর পাওয়া গেছে। ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। বৃষ্টির কারণে এ অঞ্চলের সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতি আরও কিছু দিন থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তুরস্কের আবহাওয়া দফতরের (টিএসএমএস) পূর্বাভাসে ১৪ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত দেশটির দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের জন্য অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সম্ভাব্য অতিবর্ষণে দুর্ভোগের আশঙ্কা থাকা এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে আদিয়ামান, দিয়ারবাকির, এলাজিগ, মালত্য, কাহরামানমারাস, মারদিন, সিভাস, সানলিউরফা ও কিলিস প্রদেশ। গত মাসের ভূমিকম্পে এই এলাকাগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে প্রলয়ংকরি ভূমিকম্প আঘাত হানে তুরস্কের দক্ষিণপূর্বাঞ্চল এবং সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল। রিখটার স্কেলে সেই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। ভূমিকম্পে পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় দেশ দুটির বিশাল এলাকা। এতে প্রাণ হারান ৫১ হাজারেরও বেশি মানুষ। শুধু তুরস্কেই প্রাণ হারিয়েছে ৪৫ হাজারেরও বেশি মানুষ। ভূমিকম্প আঘাত হানার ৪০ দিন পর সেখানে বন্যায় প্রাণহানি ঘটনা ঘটল।

এনবিএস/ওডে/সি

news