মণিপুর রাজ্যে তীব্র সহিংসতা, মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়াল

ভারতের মণিপুর রাজ্যে জাতিগত সহিংসতায় মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছেন ২ শতাধিক। তবে সরকারী সূত্রে মৃতের সংখ্যা ৫৪ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংঘাতের মধ্যে তিন দিন কেটে যাওয়ার পরও রাজ্যটিতে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। গত বুধবার অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আদিবাসী ঐক্য মিছিলের ডাক দেয়া হয়েছিল মণিপুরের চূড়াচাঁদপুর জেলায়। সেই মিছিল থেকে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের জেলায় জেলায়। শুক্রবারে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
খবরে বলা হয়েছে, বহু মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মোতায়েন করা হয়েছে ১০ হাজার ভারতীয় সেনা।

সরকারি কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, গত শনিবার (৬ জুলাই)  রাজ্যের রাজধানী ইম্ফল উপত্যকায় জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়ে আসে। সেখানে দোকানপাট ও বাজার আবার খোলা হয়েছে। রাস্তায় গাড়িও চলেছে। মণিপুরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেটেই গোষ্ঠীর সঙ্গে অন্য আদিবাসীদের বিরোধের সূত্র ধরে এই রক্তপাতের সূত্রপাত হয়। মেটেইদের তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি দেয়ার দাবি মেনে নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে সেখানকার রাজ্য সরকার। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাকি উপজাতি সংগঠনগুলো।

শুক্রবার মেটেই উপজাতির লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময়ই প্রবল বাধার মুখে পড়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সহিংসতা কবলিত এলাকা থেকে প্রায় ১৩ হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

মনিপুর সরকারের নিরপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং ইম্ফালে সাংবাদিকদের বলেন যে, ১৮-২০ জন নিহত হয়েছে। তবে তবে তিনি সম্প্রতি সহিংসতা না অন্যান্য ঘটনায় লোকজন নিহত হয়েছে কিনা তা তারা খঁতিয়ে দেখছেন।

কুলদীপ সিং বলেন, আহত ১০০ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করা হচ্ছে। তিনি বলেন গত কয়েকদিনে ৫ শতাধিক বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে এবং বহু গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। রাজ্যের রাজধানী ইম্ফাল ও তার দক্ষিণের চুরাচন্দনপুর হাসপাতাল মর্গ জানিয়েছে, দাঙ্গায় মোট ৫৪ জন নিহত হয়েছে।

শনিবার রাতে আরোকটি সহিংস দাঙ্গার পর রাজ্যটিতে এখনো উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। একজন শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা সতর্ক করে দেন যে, দাঙ্গাকারীরা থানা থেকে অস্ত্র ও গোলাবারূদ লুট করেছে। কর্তৃপক্ষ দাঙ্গা ঠেকাতে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে এবং চরম পরিস্থিতিতে দেখা মাত্র গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে।

এনবিএস/ওডে/সি

news