ইউরোপে ন্যাটোর নজিরবিহীন বিমান মহড়া শুরু

 রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো ইউরোপে এযাবৎকালের বৃহত্তম ‘বিমান মহড়া’ শুরু করেছে। সোমবার (১২ জুন) জার্মানিতে ১৩ দিন ব্যাপী এই মহড়া শুরু হয়। মিত্রদের মধ্যকার ঐক্য বাড়াতে ও রাশিয়ার মতো সম্ভাব্য হুমকির বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শনের অংশ হিসেবে এই মহড়ার আয়োজন করা হয়েছে।

জার্মানির নেতৃত্বে শুরু হওয়া ‘এয়ার ডিফেন্ডার ২৩’ মহড়ায় ন্যাটো সদস্য ২৫টি দেশ এবং মিত্র জাপান ও সুইডেনের ২৫০টি যুদ্ধবিমান অংশ নিচ্ছে। সুইডেন ন্যাটোর সদস্য হওয়ার পথে রয়েছে। ২৩ জুন পর্যন্ত এই মহড়া শেষ হবে। অংশগ্রহণকারী বিমানগুলোর মধ্যে ২০০টি পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

ন্যাটো অঞ্চলে কোনো ধরনের হামলার ক্ষেত্রে ড্রোন ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে সুরক্ষায় আন্তবাহিনী সামরিক সরঞ্জাম ব্যবহারে দক্ষতা ও প্রস্তুতি বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ১০ হাজারের বেশি সেনাসদস্য এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছেন। জার্মান বিমানবাহিনীর লে. জেনারেল ইঙ্গো গেরহার্টজ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেন, ‘আমরা যে গুরুত্বপূর্ণ বার্তাটি দিচ্ছি, সেটা হলো আমরা নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম।’

রাশিয়া ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নিজ ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করে নেয়। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে ২০১৮ সালে ‘এয়ার ডিফেন্ডার’ মহড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। যদিও গেরহার্টজ জোর দিয়ে বলেন, কাউকে উদ্দেশ্য করে এই মহড়া চালানো হচ্ছে না।

গেরহার্টজ বলেন, যেমন ধরুন, এই মহড়ার কোনো জঙ্গী বিমানকে কালিনগ্রাদের দিকে পাঠানো হবে না। কালিনগ্রাদ ন্যাটো সদস্য পোল্যান্ড ও লিথুনিয়ার সীমান্তবর্তী রাশিয়ার ছিটমহল। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিরক্ষামূলক জোট এবং সেভাবেই মহড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।’

এমন সময় ন্যাটো এই মহড়া চালাচ্ছে, যখন রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা শুরু করেছে ইউক্রেন। পাল্টা হামলায় ইউক্রেনীয় বাহিনী ন্যাটো মিত্রদের দেওয়া ক্ষেপণাস্ত্র, ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানসহ বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহার করছে। এই হামলায় অংশ নেওয়া ১২টি ইউক্রেনীয় ব্রিগেডের মধ্যে নয়টির সেনাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে ন্যাটো।

জোটভুক্ত দেশগুলোর নগর, বিমানবন্দর, নৌবন্দরগুলোকে  ক্রজ মিসাইল ও ড্রোন হামলার থেকে রক্ষায় সম্মিলিত শক্তি ও প্রস্ততি জোরদার করার এ মহড়ায় প্রায় ১০ হাজার সেনা অংশ নিচ্ছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা ন্যাটোকে নতুন করে চাঙা করে তুলেছে। সাবেক সোভিযেত ইউনিয়নের মোকাবিলার জন্য ৭৫ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে এ সামরিক জোট গড়ে তোলা হয়। ন্যাটোর ধারা ৫ অনুযায়ী এর কোনো এক দেশের ওপর যে কোন হামলাকে গোটা জোটের ওপর হামলা বলে গণ্য করা হবে। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

 এনবিএস/ওডে/সি

news