পাকিস্তানে বন্দুকধারীদের হামলায় ২ সেনা সদস্যসহ নিহত ৮, আহত ২৬

পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় চিলাস শহরের কাছে বন্দুকধারীরা একটি বাসে হামলা চালিয়ে আট যাত্রীকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় অন্তত ২৬ জন আহত হয়েছে। 

হামলার শিকার বাসটি কারাকোরাম হাইওয়ে দিয়ে যাতায়াত করছিল। এই হাইওয়েটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু সড়কগুলোর একটি। নিহতদের মধ্যে দেশটির দুজন সেনা সদস্যও রয়েছেন। 


আঞ্চলিক সরকারের মুখপাত্র মুহাম্মদ আলী জোহর বলেছেন, শনিবার সন্ধ্যায় হামলাকারীরা বাসে গুলি চালানোর পর প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। পরে আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে। মূলত হামলাকারীরা বাসে গুলি চালানোর পর একপর্যায়ে এটি বিপরীত দিক থেকে আসা একটি লরির সঙ্গে ধাক্কা খায়। কোনও গোষ্ঠী তাৎক্ষণিকভাবে হামলার দায় স্বীকার করেনি এবং যাত্রীবাহী বাসে গুলিবর্ষণের মাধ্যমে হামলা চালানোর উদ্দেশ্যও এখনও পর্যন্ত অস্পষ্ট। গিলগিট-বাল্টিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী হাজি গুলবার খান এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আক্রমণে জড়িত সন্ত্রাসীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করবে সরকার।’

চিলাস শহরটি পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের কাছে গিলগিট বাল্টিস্তানের পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেখানে সন্ত্রাসী হামলা বেশ বেড়েছে। এর মধ্যে কিছু হামলার জন্য পাকিস্তানি তালেবান বা তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) দায় স্বীকার করেছে।

এক্সপ্রেস ট্রিবিউন নিউজ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে চিলাসের হুদুর এলাকায়, পর্যটকদের জন্য একটি জনপ্রিয় স্টপিং পয়েন্ট, কারাকোরাম হাইওয়েতে। উদ্ধারকারী সূত্রের মতে, বন্দুকের গুলিতে বাসে আগুন লেগে যায়, এতে নারী ও শিশুসহ ২৬ জন আহত হয়, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

স্থানীয় পুলিশ জানায়, আহতদের চিলাস আঞ্চলিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঘিজর জেলা থেকে যাত্রী নিয়ে বাসটি রাওয়ালপিন্ডি যাওয়ার পথে হামলাকারীরা হামলা চালায়।
 এ ঘটনার তদন্তে গঠন করা হয়েছে বিশেষ তদন্ত দল। ঘটনার নিন্দা প্রকাশ করে, জি-বি মুখ্যমন্ত্রী হাজি গুলবার খান যাত্রীবাহী বাসে হামলাকে সন্ত্রাসবাদের কাপুরুষোচিত কাজ বলে অভিহিত করেছেন। 

মুখ্যমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন যে জঘন্য হামলার সাথে জড়িতরা আইনের পূর্ণ শক্তির মুখোমুখি হবে এবং তাদের গ্রেপ্তার করা সরকারের জন্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হবে। গিলগিট-বালতিস্তান সরকার আহতদের চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় খরচ বহন করবে বলে তিনি আশ্বাস দেন। 

পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলি জারদারিও এই ঘটনার নিন্দা করেছেন, অপরাধীদের জন্য কঠোর শাস্তির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি শহীদদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

news