গাজায় দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়তে পারে: জাতিসংঘ

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলা তৃতীয় মাসে গড়িয়েছে। উত্তর গাজার পর দক্ষিণ গাজায়ও বড় ধরনের স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে উত্তরাঞ্চল থেকে পালিয়ে আসা ফিলিস্তিনিরা আরেক দফা বাস্তুচ্যুত হচ্ছেন। বিরামহীন হামলার কারণে তাদের কাছে ত্রাণসহায়তাও পৌঁছানো যাচ্ছে না। এতে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে জাতিসংঘ। 

বুধবার ছিল গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের ৬১তম দিন। আগের ২৪ ঘণ্টা ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইতিমধ্যে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত ফিলিস্তিনিদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।

অন্যদিকে গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ জনের মতো নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩২০ জন সেনা সদস্য। এ ছাড়া গাজায় হামাসের সঙ্গে লড়াইয়ে আরও ৮০ জনের বেশি ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন।

গাজায় ইসরায়েলি হামলা তীব্রতর হওয়ায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সেখানে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ১৯ লাখে দাঁড়িয়েছে। তাদের বড় একটি অংশই শিশু। ইসরায়েলের বিরামহীন হামলার কারণে বাস্তুচ্যুত এসব মানুষের কাছে ত্রাণসহায়তা পৌঁছানো না গেলে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বলেছে, ‘নতুন করে লড়াই শুরু হওয়ার ফলে ত্রাণ বিতরণ করা যাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে ত্রাণকর্মীদের জীবনও বিপন্ন হতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, এর ফলে বেসামরিক সাধারণ মানুষ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন। গাজায় ২০ লাখ মানুষের বেঁচে থাকার জন্য এই ত্রাণের খাদ্যশস্যের উপর নির্ভরশীল।’

ডব্লিউএফপি বলেছে, ‘আমাদের কর্মীদের জন্য গাজা ভূখণ্ডে নিরাপদ, বাধাহীন ও দীর্ঘকালীন যাতায়াতের ব্যবস্থা চাই। তাহলেই তারা মানুষের কাছে বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য ত্রাণ পৌঁছে দিতে পারবে। একমাত্র দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা হলেই এ মানবিক বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব।’

জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বলছে, গাজার বর্তমান পরিস্থিতি বিপর্যয়কর। বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত খাদ্যপণ্য নেই। পান করার মতো সুপেয় পানিও বাসিন্দারা পাচ্ছেন না।

পাঁচ সন্তানের মা নেভেন হাসান বলেন, ‘আমরা দিনে এক বেলা খাই। বেশির ভাগ সময়ই ছোট এক টুকরা রুটি আর টিনের কৌটায় প্রক্রিয়াজাত করা মটরশুঁটি খেয়ে কাটে।’ এই মা আরও বলেন, ‘আমার ছয় মাসের বাচ্চার জন্য দুধ কিনতে পারছি না। আমার ছেলেমেয়েদের সবাই অসুস্থ। তাদের দূষিত পানি পান করতে হচ্ছে। শীত কাটানোর মতো কোনো কম্বলও আমরা পাইনি।

news