২৯ দেশে মাঙ্কি পক্স আক্রান্ত হাজারেরও বেশি! বাতাসেও ছড়াতে পারে ভাইরাস, সতর্ক করল হু

 হাজারেরও বেশি মাঙ্কি পক্স (Monkey Pox) আক্রান্তের পরিসংখ্যান মিলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর কাছে। হু-প্রধান ঘেব্রেসিয়াস বুধবারই জানিয়েছেন, আফ্রিকার পরে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে আমেরিকা, কানাডাতেও। ব্রিটেন, স্পেন ও পর্তুগালে এই রোগ বাড়ছে। অর্থাৎ নন-এনডেমিক দেশগুলিতে মাঙ্কি পক্স হওয়ার ঝুঁকি সম্পূর্ণ ‘বাস্তব’। মনে করা হচ্ছে, বাতাসের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস। ফলে করোনার পরে মাঙ্কি পক্স নতুন করে মহামারী বয়ে আনবে কিনা সে নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

তবে একই সঙ্গে হু-প্রধান জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি এই অসুখে। তাই ইউনিসেফের স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে গণ টিকার কথা এখনই সুপারিশ করছে না। যেসব দেশে গোষ্ঠী সংক্রমণের খবরও পাওয়া গিয়েছে, সেই দেশগুলিতে এখন অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, যাতে কোনও ভাবে রোগ আরও ছড়িয়ে না পড়ে।

হু আরও মনে করছে, মাঙ্কি পক্স নতুন সংক্রমণ নয়। অনেকদিন ধরেই হয়ত এই রোগটি কোনও কোনও দেশে উপস্থিত ছিল, কিন্তু সে ঘটনা ধরা পড়েনি। এখন সংক্রমণ বাড়ার পরে তা ধরা পড়ছে বিশ্বজুড়ে।

তথ্য বলছে, দু’বছর আগে আমেরিকায় এক জনের শরীরে মিলেছিল ভাইরাস। তবে এর পরে আর সংক্রমণ ছড়ায়নি। মূলত আফ্রিকা, নাইজেরিয়াতে এই ভাইরাসের সংক্রমণের খবর পাওয়া যেত এতদিন। এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশে। বেলজিয়াম, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল, স্পেন, সুইডেনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত বাড়ছে আমেরিকা, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াতেও। এই কারণেই উদ্বিগ্ন হু সতর্কতা জারি করেছে।
কী এই মাঙ্কি পক্স ভাইরাস (Monkey Pox)
মাঙ্কিপক্স (Monkey Pox) ভাইরাস অর্থোপক্সভাইরাস (Orthopoxvirus genus) পরিবারের। গুটিবসন্ত যে গোত্রের ভাইরাস থেকে হয় মাঙ্কি পক্সও সেই গোত্রেরই। এই ভাইরাসের সংক্রমণেও জ্বর, সারা গায়ে বড় বড় ফোস্কার মতো র‍্যাশ বের হবে। ত্বক শুকিয়ে খসখসে হয়ে যাবে, প্রচণ্ড চুলকানি, জ্বালা হবে র‍্যাশের জায়গায়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, মৃত প্রাণীর মাংস, মলমূত্র থেকে ছড়ায় ভাইরাস। আফ্রিকার রডেন্ট বা ইঁদুর জাতীয় প্রাণীই এই ভাইরাসের বাহক। ১৯৫৮ সালে আফ্রিকার এক প্রজাতির বাঁদরের মধ্য়ে এই ভাইরাস পাওয়া গিয়েছিল, তখনও মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেনি। ১৯৭০ সালে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ও নাইজেরিয়াতে এই ভাইরাস প্রথম খুঁজে পাওয়া যায় মানুষের শরীরে।

চিন্তার ব্যাপার হল যৌনমিলনেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে বলে সতর্ক করা হচ্ছে। বিশেষ করে সমকামী পুরুষ, বাইসেক্সুয়ালদের মধ্য়ে সংক্রমণ বাড়ছে। আমেরিকা, কানাডায় গে পার্টি থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে। মাঙ্কিপক্সে সংক্রমিতের সঙ্গে কোনও রকম শারীরিক সম্পর্কে কেউ জড়ালে, দ্বিতীয়জন সংক্রমিত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এই ভাইরাসের ইনকিউবেশন পিরিয়ড ২-৩ দিন। সংক্রমণ ছড়ানোর তিন দিনের মাথায় ধূম জ্বর আসবে রোগীর। কাঁপুনি দিয়ে জ্বর হতে পারে। সেই সঙ্গেই সারা শরীরে বড় বড় ফোস্কার মতো র‍্যাশ বের হবে। ত্বক শুকিয়ে খসখসে হয়ে যাবে, প্রচণ্ড চুলকানি, জ্বালা হবে র‍্যাশের জায়গায়। একই সঙ্গে অসহ্য় মাথাব্যথা, পেশির খিঁচুনিও হতে পারে। শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে। প্রায় দুই থেকে চার সপ্তাহ ভোগাবে এই রোগ। খবর দ্য ওয়ালের /এনবিএস/২০২২/একে

news