হাইতির প্রেসিডেন্টকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন ফার্স্টলেডি

বিবিসি  জানায়, ২০২১ সালের ৭ জুলাই দেশটির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মইসে নিজ বাড়িতে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন।

সেসময় স্ত্রী মার্টিন মইসে আহত হলেও হাইতির একজন বিচারক বর্তমানে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ফার্স্টলেডিকেই অভিযুক্ত করেছেন।

বিচারক ওয়ালথার ওয়েসার ভলতেয়ার প্রেসিডেন্ট হত্যার তদন্তের পর ১২২ পৃষ্ঠার একটি নথি প্রনয়ণ করেন। সোমবার এই নথি হাইতির গণমাধ্যম আইবি পোস্টের ওয়েভসাইটে ফাঁস হয়ে পড়লে দেশটিতে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।

ফাঁসকৃত এই নথি থেকে জানা যায়, দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ক্লাউডি জোসেফের সঙ্গে মিলে প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মইসেকে হত্যার পরিকল্পনা করে ফার্স্টলেডি। তাদের নির্দেশেই ৫৩ বছর বয়সী প্রেসিডেন্টকে রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উপকণ্ঠে তার ব্যক্তিগত বাসভবনে গুলি করে হত্যা করে কলাম্বিয়ান ভাড়াটে খুনিদের একটি দল।

বিবিসি জানায়, প্রেসিডেন্ট হত্যার ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন হাইতিয়ান বিচার মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা জোসেফ ফেলিক্স বাডিও। তবে উল্টো তিনিই অভিযোগ করেন, ফার্স্টলেডি মার্টিন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মিলে জোভেনেল মইসেকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরানোর ষড়যন্ত্র করেন। তাদের পরিকল্পনা ছিল, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নেতৃত্ব দেবেন ক্লাউডি জোসেফ।

অপরদিকে ক্লাউডি জোসেফ গণমাধ্যম মিয়ামি হেরাল্ডকে বলেন, প্রেসিডেন্ট হত্যাকাণ্ডে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি। তিনি প্রেসিডেন্ট মইসে নিহত হবার দু’সপ্তাহ পরেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন হেনরি।

বিচারকের নথিতে মার্টিন মইসেকে ‘সন্ত্রাস এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যোগসাজশে’র অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়। তাছাড়া ক্লাউডি জোসেফসহ ৫০ জনকে অভিযুক্ত করেছেন বিচারক ওয়ালথার।

অভিযোগপত্রে বিচারক জানান, স্বামীর হত্যার পরিপ্রেক্ষিতে দেয়া মিসেস মইসের বয়ান এতটাই অসঙ্গতিপূর্ণ যে তা তাকে সন্দেহভাজন করে তোলে। এ বিষয়ে হাইতির জাতীয় প্রাসাদের মহাসচিব লিওনেল ভালব্রুনের একটি বিবৃতিতে জানান, প্রেসিডেন্ট হত্যার দু’দিন আগে প্রাসাদে আসেন ফার্স্টলেডি। তারপর পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী প্রাসাদ থেকে বেশ কিছু জিনিসপত্র সরিয়ে নেন তিনি। এমনকি মহাসচিব ভালব্রুনকে অভিযোগ করে তিনি বলেন, তার স্বামী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ‘আমাদের জন্য কিছুই করেননি’।

বর্তমানে হাইতির কর্তৃপক্ষ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট মইসের হত্যার তদন্ত করছে। ইতোমধ্যেই হাইতির প্রেসিডেন্ট হত্যার সাথে জড়িত থাকার দায়ে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

news