আফগানিস্তানে বন্যায় নিহত ৩ শতাধিক, রাস্তায় পড়ে আছে মরদেহ
গত শুক্রবার আফগানিস্তানে হঠাৎ বন্যা দেখা দেয়। শুষ্ক শীতের পর এ ধরনের বন্যায় মাইলের পর মাইল এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মানবিক সমন্বয় বিষয়ক দপ্তর (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, ১০ এবং ১১ মে ভারী বৃষ্টিপাত এবং আকস্মিক বন্যা উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে আঘাত হানে। বাদাখশান, বাঘলান এবং তাখার প্রদেশের ২১টি জেলা পানিতে তলিয়ে যায়। প্রাথমিক প্রতিবেদনে তিনটি প্রদেশে ১৮০ জন নিহত এবং ২৪০ জনের বেশি আহত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। ৮,৯৭৫টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। রাস্তা, সেতু এবং পাবলিক স্কুলের ক্ষতি ও ধ্বংসের পাশাপাশি, বাঘলান এবং তাখার প্রদেশ জুড়ে ১১টি স্বাস্থ্য সুবিধা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি পরিষেবা ব্যাহত করেছে এবং ৪,২৬০টি গবাদি পশু হারিয়ে গেছে।
পক্ষান্তরে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, বন্যায় ৩০০ জন প্রাণ হারিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২ হাজারের বেশি বাড়িঘর। এ বন্যায় আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য বাঘলানের ৫ জেলা আক্রান্ত হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দা নুর বিবিসিকে বলেন, বাড়িতে প্রবেশ করে আমি আশাহত হলাম। বাড়িতে কাউকে খুঁজে পেলাম না। এক পর্যায়ে তিনি হাল ছেড়ে দেন। এরপর রাত ১টার দিকে তার মেয়ে সাইদার বাড়িতে যান। পরের দিন সকালে বাড়িতে ফেরার পথে তিনি তার পরিবারের লোকদের মরদেহ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন।
জীবদ্দশায় নুর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সৃষ্ট এমন দৃশ্য আর কখনও দেখেননি বলে জানালেন, যদিও দেশটির বিভিন্ন এলাকা গৃহযুদ্ধে জর্জরিত। বন্যায় নুরের ২৫ বছর বয়সী মেয়ে সাইদার একটি সন্তান মারা গেছে। তিনি বলেন, ঝড়টি ছিল দানবের মতো, এটি শুরু হওয়ার পর আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম।
নুরের গ্রামের অনেক রাস্তা বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেগুলো আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বন্যায় অধিকাংশ পরিবার দুই থেকে তিনজন করে স্বজন হারিয়েছে। তারা এখন সহযোগিতার জন্য অপেক্ষা করছেন।
রৌজাতুল্লাহ নামের একজন নার্স বলেন, আমরা যেসব এলাকার ভ্রমণ করেছি সেখানে সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি তার দলের সঙ্গে ফুল্লল নামক একটি গ্রাম পরিদর্শনে যান। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা
এনবিএস/ওডে/সি