ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি চার দশকের বেশি সময় ধরে দেশটির ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। জন্ম ১৯৩৯ সালের ১৯ এপ্রিল, মাশহাদ শহরের এক সাধারণ ধর্মীয় পরিবারে। অল্প বয়সেই নাজাফ ও কুমে উচ্চশিক্ষা নিয়ে ইসলামি চিন্তা ও রাজনীতিতে পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলবির বিরোধিতায় ছয়বার গ্রেপ্তার ও তিন বছর নির্বাসিত হন।

তবে তার জীবনের মোড় ঘুরে যায় ১৯৮১ সালের ২৭ জুন, এক শুক্রবার। তেহরানের আবুজার মসজিদে বক্তব্য শেষে ছদ্মবেশী এক ব্যক্তি বোমা-সংযুক্ত টেপ রেকর্ডার সামনে রাখেন। বিস্ফোরণে খামেনির ডান হাত পঙ্গু হয়ে যায় এবং গলার স্বরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই হামলার পেছনে ছিল চরমপন্থী ফোরকান গ্রুপ।

পরদিন আরেক বিস্ফোরণে নিহত হন ৭০ জনের বেশি ব্যক্তি। এই ঘটনাগুলো খামেনিকে ইরানি রাজনীতিতে দৃঢ় ও অপরিহার্য এক নেতৃত্বে পরিণত করে। এরপর তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন (১৯৮১–১৯৮৯) এবং আয়াতুল্লাহ খোমেনির মৃত্যুর পর হন সর্বোচ্চ নেতা, যদিও ধর্মীয় যোগ্যতা নিয়ে তখন বিতর্ক ছিল।

২০০৩ সালে একটি ফতোয়ায় তিনি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করার নৈতিক অবস্থান জানান, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসিত হয়।

২০২৫ সালের ১৩ জুন—আবার এক শুক্রবার—ইসরায়েলের হামলার পর তার হত্যাচেষ্টার গুঞ্জন ওঠে। দেশজুড়ে বিক্ষোভ, অর্থনৈতিক চাপ এবং ঘনিষ্ঠদের মৃত্যুতে বর্তমানে খামেনি গভীর সংকটে।

জেরুজালেম পোস্টের তথ্যমতে, তার উত্তরসূরি হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন পুত্র মোজতবা খামেনি। কঠোর নিয়ন্ত্রণের অধীনে থাকা এই নেতা এখন ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে, যার ভবিষ্যৎ হয়তো আরও নাটকীয় রূপ নিতে চলেছে।

news