ইরানের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে ইসরাইলের গভীরে হামলা হবে: খাররাজি

ইরানের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক কৌশলগত পরিষদের প্রধান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল খাররাজি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, যেকোনো প্রতিবেশী দেশের পক্ষ থেকে ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিগ্রস্ত করা হলে তেহরান তার সমুচিত জবাব দেবে।কাতার-ভিত্তিক নিউজ চ্যানেল আল-জাযিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনকারী আরব দেশগুলোকে ইঙ্গিত করে তিনি এ সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন।

খাররাজি বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর পক্ষ থেকে আমাদের নিরাপত্তাকে টার্গেট করা হলে ওইসব দেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং ইসরাইলের গভীর অভ্যন্তরে হামলা চালানো হবে।তিনি বলেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল দুর্বল অবস্থানে রয়েছে এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই অবৈধ রাষ্ট্রের প্রতি যে সমর্থন ঘোষণা করেছেন তাতে এটির শক্তি মোটেও বেড়ে যায়নি।

কামাল খাররাজি বলেন, ইরানের গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানো হলে তেহরান যে ইসরাইলের গভীর অভ্যন্তরে হামলা চালানোর ক্ষমতা রাখে তা ব্যাপকভিত্তিক সামরিক মহড়া চালিয়ে প্রমাণ করা হয়েছে।

সৌদি কর্মকর্তারা সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করার যে আগ্রহ দেখিয়েছেন সাক্ষাৎকারে সে সম্পর্কেও কথা বলেন ইরানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে রিয়াদের সঙ্গে যেকোনো সংলাপে বসতে প্রস্তুত রয়েছে রিয়াদ। খাররাজি বলেন, ইরান ও সৌদি আরব এ অঞ্চলের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ দেশ এবং তাদের মধ্যকার মতবিরোধ মিটে গেলে পশ্চিম এশিয়ায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে।

ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে চায় বলে পশ্চিমা দেশগুলো যে অভিযোগ করছে তা প্রত্যাখ্যান করেন কামাল খারাজি। তিনি বলেন, ইরান মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ২০ থেকে ৬০ ভাগে উন্নীত করেছে এবং এই মাত্রাকে ৯০ ভাগে নিয়ে যাওয়াও এখন তেহরানের জন্য সময়ের ব্যাপার মাত্র। তিনি বলেন, কাজেই এ বিষয়টি এখন আর কারো কাছে অস্পষ্ট নয় যে, পরমাণু অস্ত্র তৈরি করার সম্পূর্ণ কারিগরি দক্ষতা ইরানের রয়েছে যদিও এই অস্ত্র তৈরির কোনো সিদ্ধান্ত তেহরান নেয়নি।

পরমাণু অস্ত্র তৈরি করার জন্য শতকরা ৯০ ভাগ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম প্রয়োজন। 

খাররাজি তার দেশের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও আঞ্চলিক নীতি নিয়ে যেকোনো ধরনের সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বলেন, এসব বিষয়ে আলোচনায় বসার অর্থ হবে শত্রুর সামনে নতজানু হওয়া।

পরমাণু সমঝোতা পুনরুজ্জীবন নিয়েও সাক্ষাৎকারে কথা বলেন ইরানের এই সিনিয়র কূটনীতিক। তিনি বলেন, আমেরিকা একবার পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে প্রমাণ করেছে সে লিখিত চুক্তিও মানে না। কাজেই এমন একটি দেশের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসার যেমন অর্থ হয় না তেমনি তাকে বিন্দুমাত্র বিশ্বাস করা যায় না। খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news