ফের সম্পর্ক স্থাপন করবে হামাস ও সিরিয়া: জোরদার হবে ইসরাইল বিরোধী সংগ্রাম

ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস জানিয়েছে তারা সিরিয়া সরকারের সাথে নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দামেস্কের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

২০১১ সালে হামাস ও সিরিয়ার সম্পর্কে দূরত্ব হয় এবং এখনো তা অব্যাহত রয়েছে। সিরিয়ায় সংকট শুরুর পর হামাস দামেস্কে তাদের দফতর বন্ধ করে দিয়েছিল এবং তখন থেকে দু'পক্ষের সম্পর্কে উত্তেজনা চলে আসছে। কিন্তু এক দশক অতিক্রান্ত হওয়ার পর হামাস আবারো সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার পদক্ষেপ নিল। হামাস জানিয়েছে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বার্থে এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে সিরিয়ার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক পুন:প্রতিষ্ঠা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  

অন্যদিকে, সিরিয়া  সরকারও প্রতিনিয়ত ইসরাইলি আগ্রাসনের স্বীকার হচ্ছে এবং ফিলিস্তিন ইস্যুতে সবসময়ই ইতিবাচক ভূমিকা রেখে সিরিয়া ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সমর্থন দিয়ে এসেছে। কিন্তু তারপরও হামাস ২০১১ সালে দামেস্কের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল।

যাইহোক, হামাস এমন সময় সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার পদক্ষেপ নিল যখন ফ্রিডোম ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট, প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন বা পিএলও'র মতো ফিলিস্তিনের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো দামেস্কের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রেখেছিল এবং তারা এও বলেছিল সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ বা  গণ্ডগোল বাধানো হয়েছিল তার পেছনে ইসরাইলি ষড়যন্ত্র ছিল।

সিরিয়া সরকার ও সেনাবাহিনী ইসরাইল ও আমেরিকার মদদপুষ্ট উগ্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিজয় লাভের পাশাপাশি নিজ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে সক্ষম হয়। এ ছাড়া ২০১৭ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে ইসমাইল হানিয়া হামাসের রাজনৈতিক দফতরের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর হামাস এ অঞ্চলে ইসরাইল বিরোধী সব প্রতিরোধ সংগঠনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়। তখন থেকেই হামাস ও সিরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের গুঞ্জন শুরু হয়েছিল এবং এখন তা বাস্তবে রূপ দিতে যাচ্ছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সিরিয়ার সাথে হামাসের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর জন্য খুবই  গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে কোনো কোনো আরব দেশ দখলদার ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছে যা কিনা ফিলিস্তিনিদের জন্য অনেক বড় আঘাত। এ অবস্থায় সিরিয়ার সাথে হামাসের সম্পর্ক উন্নয়ন এ অঞ্চলে ইসরাইলবিরোধী প্রতিরোধ সংগ্রামে ফিলিস্তিনিদের অবস্থান শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে।

পিএলও'র কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য হানি আল সাওয়াবেতে সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে হামাসের এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বলেছেন, আরব-ফিলিস্তিন সম্পর্ক উন্নয়ন ফিলিস্তিনিদের স্বার্থ রক্ষা করবে এবং এ অঞ্চলে সব প্রতিরোধ শক্তিগুলোর অবস্থানকে শক্তিশালী করবে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, সিরিয়া ফিলিস্তিনের ইসরাইল বিরোধী প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর প্রতি সমর্থন দেয়াকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। কেননা হামাস ও দামেস্কের অভিন্ন শত্রু হচ্ছে ইসরাইল। এ অবস্থায় দামেস্কের সঙ্গে হামাসের সম্পর্ক ইসরাইল বিরোধী প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর অবস্থানকে অনেক শক্তিশালী করবে বলে সবার প্রত্যাশা।
খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news