মুরগি ছাড়াই চিলি চিকেন, গাছপালা থেকে স্টেক! প্রাণীহত্যা ছাড়াই কব্জি ডুবিয়ে মাছ-মাংস খান


 প্রাণীহত্যায় আর মন সায় দিচ্ছে না, এদিকে মাছ-মাংস খাওয়াও ছাড়তে পারছেন না। একদিন চ্য়ালেঞ্জ নিয়ে ভাবলেন আমিষ ছেড়ে দেবেন একেবারে। কিন্তু যেই ধোঁয়া ওঠা মটন বিরিয়ানি বা রগরগে চিকেন চাপ দেখলেন, এমনি মন আনচান করে উঠল। প্রাণীহত্যা ছাড়াই যদি মাছ-মাংস খেতে চান, তাহলে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। ইজরায়েল ইতিমধ্যেই কৃত্রিম মাংস তৈরির কৌশল আবিষ্কার করে ফেলেছে। খেতে অবিকল মাংসের মতো, তাতে প্রাণীজ প্রোটিও ভরপুর থাকবে, কিন্তু কোনও প্রাণীর হত্যা হবে না।

ভাবছেন তো অবাক কাণ্ড! এমনটাই কিন্তু সত্যি হয়েছে। ইজরায়েলের প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য এখন সারা বিশ্ব ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ভেগানরা অবশ্য নকল মাংস খেয়েই থাকে। তবে সেটা সব্জি দিয়ে তৈরি কোনও পদ। কিন্তু অবিকল মাংসের মতো স্বাদ বা গন্ধ যদি কেউ চান, তাহলে তার জন্য বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির প্রয়োগ করতে হবে। 

যাঁরা মাংস খেতে পছন্দ করেন, তাঁদের কাছে অত্যন্ত পছন্দের পদ স্টেক। ধরুন যদি পুরো স্টেকই আনাজ বা গাছপাতা দিয়ে তৈরি হয় তাহলে কেমন হয়! কাবাব, বার্গার, রোস্ট বিফ সবই তৈরি হতে পারে গাছপালা থেকে। ইজরায়েলের সুপারমিট ও আলেফ ফার্ম এমন ধরনের রিডাফাইনড মাংস (Redefine Meat) তৈরি করছে যা স্বাদে ও গন্ধে অবিকল আসল মাংসের মতোই হবে। কিন্তু উদ্ভিজ্জ প্রোটিন থেকে তৈরি হবে। মাংস কৃত্রিম হলেও যাঁরা সেটি চেখে দেখেছেন, সেই মাংসপ্রেমী স্টেকবোদ্ধাদেরও মত, আসল স্টেকের মতো চেহারা এবং এত সামঞ্জস্যপূর্ণ স্বাদ তাঁরা পাবেন বলে ভাবেননি। 

ভেবে দেখুন মুরগির মাংস খাচ্ছেন, কিন্তু তার জন্য কোনও মুরগিকে প্রাণে মারাই হল না! মাছ খাচ্ছেন, কিন্তু নদী বা সমুদ্র থেকে কোনও মাছ ধরে কাটা হচ্ছে না। অবাক লাগলেও এমনটা সত্যি হচ্ছে। কখনও বিভিন্ন গাছ থেকে, কখনও মুরগি বা মাছের দেহের কোষ থেকে, কখনও বা থ্রিডি প্রিন্ট করে এই আমিষ খাবারগুলি বানানো হয়। অথচ এর ফলে খাবারের পুষ্টিগত উপাদানেরও কোনও হেরফের হয় না। উদ্ভিজ্জ প্রোটিন ও প্রাণীর কোষ থেকে যদি প্রোটিন উপাদান নিয়ে গবেষণাগারে বিশেষ উপায় (Tissue Culture) সেই মাংস তৈরি করা হয়, তাহলে তাতে আসল মাংসের স্বাদও থাকে এবং প্রোটিনও ভরপুর থাকে। তার থেকেও বড় ব্যাপার হল সেই প্রাণীটিকে প্রাণে মারার দরকার পড়ে না। 
ইজরায়েলের ‘রিডিফাইন মিট’ মুরগি, গরু, ভেড়া প্রভৃতির মাংস বানায়। বিভিন্ন ধরনের স্টেকও পাওয়া যায় সেখানে। ত্রিডি প্রিন্ট করে তৈরি হয় কৃত্রিম মাংস। তবে এখানে কালির বদলে ব্যবহার করা হয় গাছ থেকে পাওয়া প্রোটিন জাতীয় উপাদান।
এ ছাড়াও আমেরিকাতে বহু জায়গায় উদ্ভিজ্জ প্রোটিন উপাদান থেকে তৈরি ‘চিকেন নাগেটস্’ বিক্রি করা হয়। এই মাংসগুলি গবেষণাগারে মুরগির দেহকোষ প্রক্রিয়াকরণ করে বানানো হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন,  বিশ্ব খাদ্য বাজারে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে এই কৃত্রিম মাংস। এতে পরিবেশ রক্ষাও হবে। বন্ধ হবে প্রাণী হত্যাও।


 খবর দ্য ওয়ালের /এনবিএস/২০২২/একে
 

news