ঢাকা, শনিবার, অক্টোবর ২৫, ২০২৫ | ১০ কার্তিক ১৪৩২
Logo
logo

ব্রেইন-ইটিং অ্যামিবা কেরালায় আতঙ্ক: এক মাসে ৩ জনের মৃত্যু, শিশু ও নারীও আক্রান্ত


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৮:০৯ পিএম

ব্রেইন-ইটিং অ্যামিবা কেরালায় আতঙ্ক: এক মাসে ৩ জনের মৃত্যু, শিশু ও নারীও আক্রান্ত

ভারতের কেরালা রাজ্যে হঠাৎ করেই মারাত্মক এক ক্ষুদ্র জীবাণু নায়েগ্লেরিয়া ফওলারি সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। সাধারণভাবে এটিকে বলা হয় ‘ব্রেইন-ইটিং অ্যামিবা’ বা মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবা। ২০২৫ সালে এ পর্যন্ত কেরালায় ৪২টি নিশ্চিত সংক্রমণ ধরা পড়েছে। NDTV জানিয়েছে, আগস্ট মাসে মাত্র এক মাসে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ মাস বয়সী এক শিশু এবং ৫২ বছরের এক নারী রয়েছেন।

এর আগে একই মাসে ৯ বছর বয়সী একটি মেয়েও মারা গিয়েছিল। আরও কয়েকজন শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কেরালা সরকার দ্রুত ‘Water is Life’ নামে একটি ক্লোরিনেশন অভিযান শুরু করেছে। এর অধীনে কূপ, পানির ট্যাংক ও জনসাধারণের গোসলখানা জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে।

মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবা মূলত উষ্ণ পানিতে জন্মানো একধরনের প্রোটোজোয়া। কূপ, পুকুর, নদী, হ্রদ এবং অপর্যাপ্তভাবে ক্লোরিন দেয়া সুইমিং পুলে এটি বেশি থাকে। সাঁতার, গোসল বা নাক পরিষ্কারের সময় এটি নাক দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে এবং দ্রুত প্রাইমারি অ্যামিবিক মেনিনগোএনসেফালাইটিস (PAM) নামের রোগ ঘটায়। সংক্রমণ বিরল হলেও মৃত্যুহার ৯৫-৯৮ ভাগ।

ভারতে আগে প্রায় ২০টি কেস নথিভুক্ত হলেও, প্রায় সবাই মারা গেছেন। ২০২৪ সালে কেরালায় ৩৬টি ঘটনা ধরা পড়ে, যার মধ্যে ৯ জন মারা যান।

উষ্ণ তাপমাত্রা ও অতিবৃষ্টি অ্যামিবার বংশবৃদ্ধি বাড়ায়। কূপ, পুকুর ও স্থানীয় পানির উৎসে নোংরা পানি ও জৈব বর্জ্য মেশার মাধ্যমে সংক্রমণ ঘটে। কাঁচা বা অপরিশোধিত পানি দিয়ে নাক ধোয়ার ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

সংক্রমণের ১–১২ দিনের মধ্যে দেখা দিতে পারে: উচ্চ জ্বর, তীব্র মাথাব্যথা, বমি ভাব, বমি, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, আলোতে সংবেদনশীলতা। এরপর বিভ্রান্তি, হ্যালুসিনেশন, খিঁচুনি, ভারসাম্য হারানো এবং কোমা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হতে পারে, যেমন সম্প্রতি কেরালায় ৯ বছর বয়সী মেয়ের ক্ষেত্রে হয়েছে।

প্রতিরোধের উপায়: বাড়িতে নিরাপদ পানি ব্যবহার করা। অপরিশোধিত কূপ, পুকুর বা নদীতে গোসল এড়িয়ে চলা। নাক ধোয়া বা আচার অনুষ্ঠানে অবশ্যই ফুটানো বা ফিল্টার করা পানি ব্যবহার করা। প্রাকৃতিক জলে মাথা ডুবিয়ে সাঁতার কাটা এড়িয়ে চলা। নাকের ক্লিপ ব্যবহার করলে ঝুঁকি কমে।