এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৯:০৯ পিএম

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে ভয়াবহ বন্যায় এ পর্যন্ত অন্তত ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৩৩ লাখ ৬০ হাজারে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ১২ লাখ ৯০ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
পাঞ্জাবের ত্রাণ কমিশনার নাবিল জাভেদ জানিয়েছেন, দুর্গত এলাকায় ৪০০টির বেশি ত্রাণ ও চিকিৎসা শিবির এবং ৩৮৫টি পশুচিকিৎসা শিবির খোলা হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৮ লাখ গবাদি পশুও নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ভারতের পানি পাকিস্তানে প্রবাহিত
ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এনডিএমএ) জানিয়েছে, কাশ্মীর ও ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের বন্যার পানি দ্রুত পাকিস্তানের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারতের হিমাচল প্রদেশে শতদ্রু নদীর উজানে দুটি বাঁধ পূর্ণ হওয়ায় অতিরিক্ত পানি বিয়াস ও শতদ্রু নদীতে ঢুকে পাকিস্তানের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে।
বর্তমানে বিয়াস নদীর পানি প্রবাহ এক লাখ কিউসেক ছাড়িয়েছে, যার মধ্যে ৫০-৮০ হাজার কিউসেক পানি পাকিস্তানে প্রবাহিত হচ্ছে। হারিকি হাইড্রলিক স্ট্রাকচারের পানির প্রবাহ তিন লাখ কিউসেক, যা কাসুর জেলার গণ্ডা সিং ওয়ালায় প্রবেশ করে তীব্র বন্যা সৃষ্টি করেছে।
এনডিএমএ জানিয়েছে, ভারতশাসিত কাশ্মীরের রাভি নদীর উজানে অস্বাভাবিক বৃষ্টি ও উষ্ণ তাপমাত্রার কারণে বাঁধ পূর্ণ হয়ে গেছে। সেখান থেকেও এক লাখ কিউসেক পানি পাকিস্তানে ঢল নামে।
আগামী ৪ সেপ্টেম্বর শতদ্রু, চেনাব, রাভি ও ঝিলম নদীর পানি মিলিত হয়ে বাহাওয়ালপুর, রাজনপুর ও মুজাফফরগড় এলাকায় ভয়াবহ বন্যা সৃষ্টি করতে পারে।
সিন্ধুতে নতুন ঝুঁকি
এনডিএমএ জানিয়েছে, ৬ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর ভারতের দিক থেকে একটি নিম্নচাপ পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে প্রবেশ করতে পারে। এতে থরপারকার, সাজাওয়াল, ঠাট্টা, বাদিন ও মীরপুরখাস জেলায় ভারী বৃষ্টি ও বজ্রঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম
পাঞ্জাব প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (পিডিএমএ) জানিয়েছে, রাভি, শতদ্রু ও চেনাব নদীর পানিতে এ পর্যন্ত ৩৩০০টির বেশি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ৪৩ হলেও, বন্যার পানি ধীরে নামায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।