এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৪:০৯ পিএম

মধ্যপ্রাচ্যের কাতারে ইসরায়েলি হামলা বিশ্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে—কি কারণে পরাশক্তি ও মিত্ররা দোহাকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হলো? আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন হলেও হামলার সময় কাতারের পাশে কেউ দাঁড়ায়নি। প্রতিবেশী দেশগুলো কিংবা ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও নীরব, যা কাতারের জন্য বড় আঘাত।
ইসরায়েল কাতারের সার্বভৌমত্বকে তোয়াক্কা না করে হামলা চালায়। অথচ কাতার নিজেই যুক্তরাষ্ট্রকে ঘাঁটি স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে এবং বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। তারপরও এদেশটি 'বন্ধুহীন' অবস্থায় পড়ে। আকাশ ও জলসীমা অবরুদ্ধ হওয়ার ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও, মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য আরব দেশগুলোও দোহাকে রক্ষা করতে এগোয়নি।
২০১৭ সালে সৌদি আরব কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছেদ করেছিল। ২০২১ সালে সম্পর্ক স্বাভাবিক হলেও, ৯ সেপ্টেম্বর ইসরায়েলি হামলার সময় কাতারকে কেউ রক্ষা করতে আসেনি। কাতার ইসরায়েলি হামলাকে 'রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস' আখ্যা দিয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে 'বিচারের মুখোমুখি' করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, হামলার বার্তা শুধু কাতারের সীমায় সীমাবদ্ধ থাকেনি। উপসাগরীয় দেশগুলো ভাবতে পারে, যে সুসম্পর্ক কাতারের সঙ্গে তারা রাখছে, তা কতটা কার্যকর। বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব মিত্রদের মধ্যে পুরোনো আস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
মিশর ও কাতার দীর্ঘদিন মধ্যস্থতা করছে, ওমান ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে, সংযুক্ত আরব আমিরাত রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে, সৌদি আরব শান্তি আলোচনায় নিজেকে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছে। তবে কাতারে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের কোনও জোরালো ব্যবস্থা না দেখায় মধ্যপ্রাচ্যে তার গ্রহণযোগ্যতাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান বিন জাসিম আল থানি সিএনএনকে বলেছেন, পুরো উপসাগরীয় অঞ্চল ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এবং ‘সম্মিলিত জবাব’ দেওয়ার প্রয়োজন। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো কাতারের সঙ্গে নিরাপত্তা ব্যবস্থার পুনর্বিবেচনা করতে পারে, তবে বাস্তবে কাতার নিজেকে যত বড় দাবিই করুক না কেন, হামলার সময় বিশ্বমঞ্চে তেমন গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখতে পারেনি।
ইরানেও ইসরায়েলি হামলার সময় উপসাগরীয় দেশগুলো আকাশ খুলেছিল। কিন্তু যখন হামলা আসে, কেউ এগিয়ে আসে না। কাতারের ঘটনা এ বিষয়টি আরও স্পষ্ট করেছে—ঘনিষ্ঠরাও বিপদে পাশে থাকে না।