এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৪:০৯ পিএম
আরব ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো যদি একযোগে ইসরায়েলের আকাশপথ বন্ধ করে দেয়, তবে দেশটির অর্থনীতি ও নিরাপত্তা মারাত্মক প্রভাবের মুখোমুখি হতে পারে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হাবতুর রিসার্চ সেন্টার বুধবার একটি বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯ সেপ্টেম্বর কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরায়েলের হামলা এই ধরনের সম্মিলিত পদক্ষেপের অনুপ্রেরণা হতে পারে। হামলায় ছয়জন নিহত হন, যার মধ্যে একজন কাতারের নিরাপত্তা কর্মকর্তা ছিলেন। তবে হামাসের কোনো শীর্ষ নেতা নিহত হননি।
এর আগে ৫৭ সদস্যের ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এবং আরব লীগ দোহায় জরুরি বৈঠকে বসে ইসরায়েলের সীমা লঙ্ঘন ও হামলার জবাবে কার্যকর পদক্ষেপ কী নেওয়া যায় তা আলোচনা করে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, আকাশপথে অবরোধ আরোপ করলে ইসরায়েলের অর্থনীতির নানা খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশটির জিডিপি সর্বোচ্চ ৫.৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে, যা ভয়াবহ মন্দার পথ খুলে দেবে।
প্রতিবেদন অনুসারে, এই পদক্ষেপ নতুন আঞ্চলিক নিরাপত্তা কাঠামো তৈরি করবে এবং ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিকভাবে সংকটে পড়বে। ওয়াশিংটনকে ইসরায়েলকে রক্ষা করা এবং আরব দেশগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব বজায় রাখার মধ্যে একটিকে বেছে নিতে হবে।
ওআইসির প্রভাবশালী সদস্য তুরস্ক, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়া যদি অবরোধে যোগ দেয়, তবে ইসরায়েল এশিয়া ও আফ্রিকার গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হারাবে। ফ্লাইটগুলো পূর্ব ও দক্ষিণমুখী বন্ধ হয়ে যাবে। বিকল্প রুটে যেতে সময় চার থেকে ছয় ঘণ্টা বাড়বে, খরচ ফ্লাইট প্রতি ৩০,০০০–৬০,০০০ ডলার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া, ইসরায়েলের এয়ারলাইনস সংস্থা এল-আলের আয় ৬০–৭৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। পর্যটন শিল্পে ধস নামবে, হীরার মতো উচ্চমূল্য পণ্য ও চিকিৎসা সরঞ্জামের রপ্তানি ব্যাহত হবে। আন্তর্জাতিক চুক্তি বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে এবং দেশের গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম অন্যত্র সরতে পারে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই কঠোর পদক্ষেপ শুধুমাত্র অর্থনীতির নয়, মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতেও মৌলিক পরিবর্তন আনতে পারে।