এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৬:০৯ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রে ছোট প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র উদ্বেগ, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষ বিদেশী কর্মীদের জন্য নতুন করে এইচ-১বি ভিসার আবেদন ফি ১ লাখ ডলার করার পর।
গত শুক্রবার স্বাক্ষরিত এই নির্বাহী আদেশের ফলে স্টার্টআপগুলো আশঙ্কা করছে, তারা হয়তো আর বিদেশী প্রতিভা ধরে রাখতে পারবে না।
উদাহরণ হিসেবে ধরা যায় ভারতীয় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজার অভিষেক সিংকে। সিয়াটলের এক স্টার্টআপে কাজ করা সিং ভেবেছিলেন, হয়তো তাকে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে চলে যেতে হবে। কারণ তার কোম্পানি তার ভিসার আবেদনের জন্য এত বিপুল টাকা বহন করতে পারবে না।
যদিও হোয়াইট হাউস পরে স্পষ্ট করেছে, এই ফি কেবল ভবিষ্যতের আবেদনকারীদের জন্য প্রযোজ্য। তবুও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর প্রভাব ব্যবসা ও অর্থনীতির ওপর মারাত্মক হতে পারে।
বিশেষ করে যেসব স্টার্টআপ এবং ছোট সংস্থা এইচ-১বি প্রোগ্রামের ওপর নির্ভর করে কর্মী নিয়োগ করে, তাদের জন্য একেকটি আবেদনে ছয় অঙ্কের ফি একেবারেই অসহনীয়।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন স্ক্রেন্টনি বলেন,
“একটা ছোট স্টার্টআপের জন্য এই খরচ সরাসরি মৃত্যুর কারণ হতে পারে।”
প্রযুক্তি ছাড়াও শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা খাতেও এর প্রভাব পড়ছে। সিয়াটলের আচরণগত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান রাইথার জানিয়েছে, তারা ভবিষ্যতে আর কোনো এইচ-১বি ভিসার জন্য আবেদন করবে না। কারণ তাদের পক্ষে ১ লাখ ডলার বহন করা সম্ভব নয়। অথচ বর্তমানে তাদের দুইজন চীনা থেরাপিস্ট এই প্রোগ্রামের আওতায় কাজ করছেন, যারা ভাষা ও সংস্কৃতিগত দক্ষতার কারণে রোগীদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারছেন।
অর্থনীতিবিদ আতাকান বাকিস্কান সতর্ক করেছেন, এই নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধি ২% থেকে নেমে ১.৫%-এ নেমে আসতে পারে। তিনি বলেন, “এই ফি শ্রমবাজার সংকুচিত করবে এবং মেধাপাচারকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।”
তবে ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, দীর্ঘদিনের ভিসার অপব্যবহার রোধ করতেই এই উদ্যোগ। তাদের মতে, বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর পক্ষে এই খরচ সামলানো সহজ হবে। নেটফ্লিক্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা রিড হেস্টিংস এমনকি এই পদক্ষেপকে “দুর্দান্ত সমাধান” বলেছেন।
তবুও অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, এটি আসলে কোম্পানিগুলোকে অফশোর কার্যক্রমে ঠেলে দেবে। কানাডা, যুক্তরাজ্য ও জাপানের মতো দেশগুলো তাই ইতিমধ্যেই হয়ে উঠছে সম্ভাব্য বিকল্প কর্মস্থল।
অভিষেক সিংও স্বীকার করেছেন, সুযোগ পেলে তিনি ভারত বা অন্য কোনো দেশে চলে যাওয়ার কথা ভাবছেন।
“এখন অনিশ্চয়তা খুব বেশি। আমাদের যদি জোর করে বের করে দেওয়া হয়, তখন বিকল্প খুঁজতে হবেই,” তিনি বলেন।