এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৭:০৯ পিএম
আফগানিস্তানে বিদেশি সামরিক ঘাঁটি ফেরানোর প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে চীন, রাশিয়া, ইরান ও পাকিস্তান। চার দেশই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগান মাটিতে নতুন করে কোনো সামরিক ঘাঁটি তারা দেখতে চায় না। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এই কূটনৈতিক অবস্থান আসে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে। ট্রাম্প তালেবান প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন আফগানিস্তানের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বাগরাম বিমানঘাঁটি আবারও পেন্টাগনের হাতে তুলে দেয়।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুয়ো জিয়াকুন জানান, গত বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের ফাঁকে আফগানিস্তান ইস্যুতে চীন, রাশিয়া, ইরান ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়।
বৈঠকের পর প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়—
আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।
যেসব দেশ আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী, তাদের মাধ্যমে দেশটিতে বা অঞ্চলে নতুন সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের চেষ্টা করা হলে তা দৃঢ়ভাবে প্রতিহত করা হবে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়েদ আব্বাস আরাঘচি, চীনের আফগানিস্তানবিষয়ক বিশেষ দূত ইউয়ে শিয়াওয়ং এবং পাকিস্তানের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক উমের সিদ্দিক। চীনের দূত ইউয়ে শিয়াওয়ং পরে বৈঠকের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ শেয়ার করেন।
চীনের মুখপাত্র গুয়ো জিয়াকুন বলেছেন, এই যৌথ অবস্থান স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে আফগানিস্তানের প্রতিবেশীরা দেশটির সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা এবং জাতীয় মর্যাদাকে সম্মান করে। তারা কোনোভাবেই চায় না আফগানিস্তান আবার বিদেশি শক্তির সামরিক খেলার ময়দানে পরিণত হোক।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তালেবান প্রশাসনকে সরাসরি সতর্ক করে বলেছেন, যদি বাগরাম বিমানঘাঁটি ফের পেন্টাগনের হাতে তুলে না দেওয়া হয়, তবে "খারাপ কিছু ঘটবে"। তার এই মন্তব্য ঘিরেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিতর্ক তৈরি হয়েছে এবং প্রতিবেশী চার দেশের অবস্থান আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
একদিকে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে প্রভাব ধরে রাখার চেষ্টা করছে, অন্যদিকে চীন, রাশিয়া, ইরান ও পাকিস্তান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে তারা কোনো নতুন সামরিক ঘাঁটির পক্ষে নয়। ফলে আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ ভূরাজনীতি ঘিরে বড় ধরনের টানাপোড়েন তৈরি হলো।