দেশের জাতীয় খেলা কাবাডি অতীতে আর্থিক সংকট ও অবহেলার কারণে স্থবির অবস্থায় ছিল। ক্রীড়া পরিষদের সীমিত সহায়তায় ফেডারেশনকে টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে কার্যক্রম চালাতে হতো। তবে এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কাবাডি ফেডারেশনকে ৫ তলা অত্যাধুনিক কমপ্লেক্স দিয়েছে।

ফেডারেশনে বহু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আসেন, কিন্তু খেলার উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেননি। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এস এম নেওয়াজ সোহাগ ২০২৪ সালের ১৪ নভেম্বর দায়িত্ব নেওয়ার পর কাবাডিকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন। রাজনৈতিক পরিচয়হীন সোহাগ ক্রীড়ার সঙ্গে নিজ উদ্যোগ ও পৃষ্ঠপোষক অর্থ ব্যবহার করে গত ৯ মাসে ফেডারেশনকে কার্যক্রমে পূর্ণরূপে সচল করেছেন।

নেওয়াজ সোহাগ এর আগে ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। তিনি বিজ্ঞাপনী সংস্থা এ্যাড টাচ্ কোম্পানির কর্ণধার। ২০১৭ সালে এ্যাড টাচ্ স্পোর্টস এন্ড লাইভ ইভেন্টের মাধ্যমে কাবাডিতে যুক্ত হন। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি খেলা বিরামহীন রাখার পাশাপাশি ফেডারেশনের আর্থিক অবস্থাও মজবুত করেছেন। বর্তমানে ফেডারেশনের নামে ৫ কোটি টাকার এফ ডি রয়েছে।

গত ১০ মাসে তিনি বাংলাদেশ কাবাডিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এগিয়েছেন। মার্চে ইরানে অনুষ্ঠিত এশিয়ান নারী চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ প্রথমবার ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে। ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় নেপালের বিরুদ্ধে কাবাডি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ জয়ী হয়েছে ৪-১ ব্যবধানে। এপ্রিলে নেপালে অনুষ্ঠিত মেয়েদের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ২-৩ হারে হেরেছে।

জাতীয় প্রতিযোগিতার মধ্যে যুব কাবাডি অনূর্ধ্ব ১৮, জাতীয় প্রতিযোগিতা, বিজয় দিবস ও স্বাধীনতার দিবস টুর্নামেন্ট, জুনিয়র সার্ভিসেস লিগ এবং রেফারিদের ব্যাসিক ট্রেনিং কোর্স সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

সাধারণ সম্পাদক জানান, অক্টোবরের ইয়ুথ এশিয়ান গেমস (পুরুষ-মহিলা) এবং ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত এসএ গেমসে বাংলাদেশ অংশ নেবে। ইতোমধ্যে জাতীয় দলের (নারী ও পুরুষ) প্রশিক্ষণ ক্যাম্প বিকেএসপিতে শুরু হয়েছে।

এস এম নেওয়াজ সোহাগ জানিয়েছেন, দেশের খেলা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে আগামী নভেম্বরে ১৪ দেশের অংশগ্রহণে নারী বিশ্বকাপ আয়োজন করতে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে দলগুলোকে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং তারা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলো: ভারত, জাপান, কেনিয়া, কোরিয়া, নেপাল, থাইল্যান্ড, ইরান, জার্মানি, উগান্ডা, জানজিবার, চায়নিজ তাইপে, আর্জেন্টিনা, হল্যান্ড ও বাংলাদেশ। স্ট্যান্ডবাই দল: পাকিস্তান ও পোল্যান্ড।

প্রতি দল পাঁচতারা হোটেলে অবস্থান করবে এবং খেলা হবে মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামে। সাধারণ সম্পাদক আশা প্রকাশ করেছেন, এই আয়োজনের জন্য প্রায় ১১ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে এবং এটি সফল হবে। সোহাগের লক্ষ্য, যতদিন ফেডারেশনে থাকবেন, কাবাডিকে দেশের খেলাধুলার শীর্ষে রাখাই হবে মূল প্রাধান্য।