ঢাকা, মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫ | ১৪ আশ্বিন ১৪৩২
Logo
logo

গাজায় রক্তাক্ত বাস্তবতা: নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৬৬ হাজার, সহায়তা বন্ধে বাড়ছে অনাহার


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৯:০৯ পিএম

গাজায় রক্তাক্ত বাস্তবতা: নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৬৬ হাজার, সহায়তা বন্ধে বাড়ছে অনাহার

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা, অবরোধ আর অনাহারে মৃতের সংখ্যা ৬৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এই ভয়াবহ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর দিয়েছে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হওয়া দুটি মরদেহসহ মোট ৭৯ জনের লাশ হাসপাতালে আনা হয়েছে। এ সময়ে আরও ৩৭৯ জন আহত হন। এর ফলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে গাজায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৬ হাজার ৫ জনে। আহতের সংখ্যা বেড়ে পৌঁছেছে ১ লাখ ৬৮ হাজার ১৬২ জনে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়েও অনেক বেশি। কারণ এখনো বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন কিংবা রাস্তায় লাশ পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না।

প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ত্রাণ সংগ্রহের সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে ছয়জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৬৬ জন আহত হয়েছেন। শুধু গত ২৭ মে থেকে মার্কিন সমর্থিত ত্রাণকেন্দ্র থেকে সাহায্য নিতে গিয়ে নিহত হয়েছেন অন্তত ২ হাজার ৫৬৬ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ১৮ হাজার ৭৬৭ জন।

চলতি বছরের মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়। এতে ২৪ লাখ বাসিন্দার জীবন মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দুর্ভিক্ষ, রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়া এবং স্বাস্থ্যসেবার ভেঙে পড়ার কারণে অনাহারে মৃত্যুর ঘটনাও বাড়ছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে হামাস ইসরায়েলে বড় ধরনের হামলা চালায়। এর প্রতিশোধ হিসেবে সেদিন থেকেই গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল এবং পরে স্থল অভিযান চালায় সেনাবাহিনী।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, প্রায় দুই বছরের সামরিক অভিযানে গাজা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ইতিমধ্যেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেওয়া অন্তর্বর্তী রায়ে আদালত তেল আবিবকে গণহত্যা বন্ধ করতে এবং গাজার সাধারণ নাগরিকদের জন্য মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছিল। তবে সেই রায় উপেক্ষা করেই আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।