ঢাকা, মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫ | ১৪ আশ্বিন ১৪৩২
Logo
logo

 ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা, ওরেগনে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনে উত্তাল বিতর্ক


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৯:০৯ পিএম

 ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা, ওরেগনে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনে উত্তাল বিতর্ক

যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন অঙ্গরাজ্যের পোর্টল্যান্ডে আগামী দুই মাসের জন্য ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিষয়টি ঘিরে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে এবং এরই মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ওরেগন কর্তৃপক্ষ। 

রবিবার  প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথের পাঠানো এক স্মারকে জানানো হয়, বিক্ষোভ চলছে বা হওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন এলাকাসহ ফেডারেল সম্পত্তি রক্ষায় পোর্টল্যান্ডে অন্তত ২০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করা হবে।

এর আগের দিন ট্রাম্প ঘোষণা দেন, অবৈধ অভিবাসী আটক কেন্দ্রগুলোকে লক্ষ্য করে চলা বিক্ষোভ দমাতে প্রয়োজনে ‘পূর্ণ শক্তি’ ব্যবহারের অনুমোদন তিনি দিয়েছেন।

এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ওরেগনের অ্যাটর্নি জেনারেল ড্যান রেফিল্ড রবিবার ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় বলা হয়েছে, সেনা মোতায়েন ‘অবৈধ ও উস্কানিমূলক’ এবং এটি জননিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি করবে।

ট্রাম্প অবশ্য দাবি করেছেন, এই পদক্ষেপ অ্যান্টিফা ও অন্যান্য দেশীয় সন্ত্রাসীদের আক্রমণ থেকে আইসিই (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) ভবনগুলোকে রক্ষা করবে। তিনি পোর্টল্যান্ডকে ‘যুদ্ধ বিধ্বস্ত শহর’ বলেও উল্লেখ করেছেন।

ওরেগনের ডেমোক্র্যাট নেতারা একযোগে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। গভর্নর টিনা কোটেক বলেন, “পোর্টল্যান্ডে কোনো জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি নেই। আমাদের সম্প্রদায় শান্ত ও নিরাপদ। যেকোনো সেনা মোতায়েন ক্ষমতার অপব্যবহার।”

সিনেটর রন ওয়াইডেন সতর্ক করে দেন, “ট্রাম্প ২০২০ সালের পরিস্থিতি আবার সৃষ্টি করতে চাইছেন।” তবে রিপাবলিকানদের একটি অংশ ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানায়। শ্রম মন্ত্রী লরি চাভেজ-ডি-রেমার বলেন, “আইনের শাসন ভেঙে পড়ে পোর্টল্যান্ড অপরাধপ্রবণ যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।”

গত কয়েক মাস ধরে পোর্টল্যান্ডের দক্ষিণ জলতটে আইসিই ভবনের সামনে প্রতিদিন বিক্ষোভ হচ্ছে। ফেডারেল এজেন্ট ও বিক্ষোভকারীদের মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হলেও স্থানীয় নেতারা শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন। তাদের অভিযোগ, আইসিই ভবন অনুমোদিত নীতিমালা ভঙ্গ করে রাতারাতি মানুষ আটক রাখছে এবং ভূমি ব্যবহার বিধি লঙ্ঘন করছে। তাই এটি বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

সম্প্রতি ট্রাম্প এক ঘোষণায় অ্যান্টিফাকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশীয় সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দেন। তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে কোনো দলকে দেশীয় সন্ত্রাসী হিসেবে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। এ ধরনের পদক্ষেপ সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে, যা বাক ও সমাবেশের স্বাধীনতা রক্ষা করে।

উল্লেখ্য, এর আগে ট্রাম্প লস অ্যাঞ্জেলেস, ওয়াশিংটন ডিসি এবং টেনেসির মেমফিসে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছিলেন। এমনকি লস অ্যাঞ্জেলেসে সহিংসতা দমাতে মেরিন সেনাও পাঠানো হয়। কিন্তু সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়ার এক ফেডারেল আদালত রায় দিয়েছে, সেই মোতায়েন ছিল অবৈধ এবং ‘পস কমিটাটাস অ্যাক্ট’-এর লঙ্ঘন। ফলে ওরেগনের ক্ষেত্রেও একই প্রশ্ন উঠছে—ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের কোনো বৈধ ভিত্তি আদৌ আছে কি না।