এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০২:০৯ পিএম
আফগানিস্তানে পুরো দেশজুড়ে হঠাৎ করেই বন্ধ করে দেওয়া হলো টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা। তালেবান সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে দেশটি এখন কার্যত সম্পূর্ণ ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটে ডুবে গেছে। খবর দিয়েছে বিবিসি, আর এ তথ্য নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট নজরদারি সংস্থা নেটব্লক্স।
মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই ফাইবার-অপটিক ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। এবার সেই ধাক্কা আরও বড় আকারে এল, কারণ মোবাইল ইন্টারনেট থেকে শুরু করে স্যাটেলাইট টিভি সম্প্রচারও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, তারা কাবুল অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়েছে।
তালেবান এখনো এ সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক কোনো কারণ জানায়নি। তবে এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা “পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত” বন্ধ থাকবে।
এরই মধ্যে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে। কাবুলের **হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর** থেকে অন্তত আটটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৫টার দিকে ফাইবার-অপটিক সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যাংকিং ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম মঙ্গলবার সকাল থেকে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নেটব্লক্স তাদের এক পোস্টে জানিয়েছে, তালেবান নৈতিকতা সংক্রান্ত পদক্ষেপ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই ধাপে ধাপে নেটওয়ার্ক বন্ধ করছে। ফলে শুধু ইন্টারনেট নয়, টেলিফোন সেবাও অচল হয়ে পড়ছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বিভিন্ন প্রদেশ থেকে ধীরগতির নেটওয়ার্ক কিংবা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নতার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল।
এদিকে ব্যবসায়ীরা সতর্ক করেছেন, এই অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ভয়াবহ আঘাত আসবে। আফগান নিউজ চ্যানেল ওয়ানটিভির সাবেক প্রধান সম্পাদক বলেন, “পুরো দেশজুড়ে এক ধরনের নীরবতা নেমে এসেছে। আফগানিস্তান এখন উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ইন্টারনেট বিচ্ছিন্নতার প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থানে।”*
এই সিদ্ধান্ত তালেবানের সাম্প্রতিক ধারাবাহিক নিষেধাজ্ঞারই অংশ। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের লেখা বই সরিয়ে দেওয়া হয়, মানবাধিকার ও যৌন হয়রানি সংক্রান্ত শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়। বর্তমানে মেয়েদের ১২ বছরের পর শিক্ষালাভে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এমনকি ২০২৪ সালের শেষ দিকে ধাত্রীবিদ্যা কোর্সও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক বাহিনী আফগানিস্তান ছাড়ার পর দ্রুত দেশের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। তখন থেকেই তারা একের পর এক সামাজিক ও রাজনৈতিক বিধিনিষেধ আরোপ করে আসছে, যার সর্বশেষ সংযোজন এই টেলিযোগাযোগ বন্ধ।