এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ০৩ অক্টোবর, ২০২৫, ০২:১০ পিএম
বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের ম্যানচেস্টারে একটি সিনাগগে ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই ইহুদি নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং আরও তিনজন আহত হয়েছেন। হামলাকারীর নাম জিহাদ আল-শামি, যিনি ঘটনাস্থলেই পুলিশের গুলিতে নিহত হন।
পুলিশ জানায়, ৩৫ বছর বয়সী সিরিয়ান বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক আল-শামি হিটন পার্ক হিব্রু কনগ্রেগেশন সিনাগগের বাইরে প্রথমে গাড়ি চালিয়ে লোকজনকে ধাক্কা দেন, এরপর ছুরি হাতে আক্রমণ চালান। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ তাকে গুলি করে হত্যা করে।
গ্রেটার ম্যানচেস্টার পুলিশ জিএমপি জানিয়েছে, এটিকে তারা একটি “সন্ত্রাসী ঘটনা” হিসেবে তদন্ত করছে এবং এর অংশ হিসেবে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমার হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “ইহুদি ক্যালেন্ডারের সবচেয়ে পবিত্র দিন ইয়ম কিপ্পুরে এ ধরনের হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয়।” তিনি আরও ঘোষণা করেন, দেশের সব সিনাগগে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে।
অন্যদিকে লন্ডনের মেয়র সাদিক খান জানিয়েছেন, রাজধানীর সিনাগগ ও আশপাশের এলাকায় দৃশ্যমানভাবে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো হবে।
প্রধান রাব্বি স্যার ইফ্রাইম মিরভিস বলেন, “এ হামলা আমাদের রাস্তাঘাট, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, সোশ্যাল মিডিয়া এবং নানা স্থানে বেড়ে চলা ইহুদিবিদ্বেষের ভয়াবহ প্রতিফলন। আমরা চাইনি এই দিন আসুক, কিন্তু মনে মনে জানতাম এ ঘটনা ঘটবেই।”
জিএমপি জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে একজন ছুরিকাঘাতে, আরেকজন গাড়ির ধাক্কায় এবং তৃতীয়জন পুলিশ অভিযানের সময় আহত হন। তিনজনের অবস্থাই স্থিতিশীল।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রস্তুতি ও প্ররোচনার অভিযোগে ৩০ বছর বয়সী দুই পুরুষ এবং ৬০ বছর বয়সী এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া হামলাকারীর পরা একটি সন্দেহজনক ডিভাইসও উদ্ধার করা হয়, যা পরে অকার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।
আল-শামি ছোটবেলায় যুক্তরাজ্যে আসেন এবং ২০০৬ সালে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পান। বৃহস্পতিবার সকাল ৯:৩১ মিনিটে প্রথম আক্রমণের খবর পায় পুলিশ। মাত্র সাত মিনিট পর সকাল ৯:৩৮ মিনিটে সশস্ত্র পুলিশ তাকে গুলি করে।
ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, পুলিশ সদস্যরা মাটিতে পড়ে থাকা আল-শামির দিকে অস্ত্র তাক করে মানুষকে সরিয়ে নিতে বলছেন। তখনও সন্দেহ ছিল, তার কাছে বোমা থাকতে পারে। যখন আল-শামি উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন, তখনই তাকে গুলি করা হয়।
এই হামলার পর পুরো ম্যানচেস্টার ও ব্রিটেনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে, বিশেষ করে সিনাগগ ও ইহুদি সম্প্রদায় অধ্যুষিত এলাকায়।