ঢাকা, শুক্রবার, অক্টোবর ৩, ২০২৫ | ১৮ আশ্বিন ১৪৩২
Logo
logo

গাজার ভয়াবহ হামলার দায়ে ইসরায়েলকে ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানালেন আইন বিশেষজ্ঞরা


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ০৩ অক্টোবর, ২০২৫, ০২:১০ পিএম

গাজার ভয়াবহ হামলার দায়ে ইসরায়েলকে ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানালেন আইন বিশেষজ্ঞরা

গাজায় চলমান ভয়াবহতা ও ফিলিস্তিনি ফুটবলারদের হত্যার অভিযোগে ইসরায়েল ও তাদের ক্লাবগুলোকে আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে।

৩০ জনেরও বেশি আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ একটি যৌথ চিঠিতে ইউনিয়ন অফ ইউরোপীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনস (উয়েফা)-কে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন ইসরায়েলি ফুটবলের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে গণহত্যার অভিযোগ

চিঠিতে জাতিসংঘের তদন্তকারীদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালাচ্ছে। তাই ইসরায়েলি ফুটবলকে নিষিদ্ধ করা এখন “অত্যাবশ্যক”।

চিঠিতে আরও দাবি করা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ৪২১ জন ফিলিস্তিনি ফুটবলার নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি ইসরায়েলের বোমা হামলায় গাজার ফুটবল অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে, যা পুরো প্রজন্মের খেলোয়াড়দের ভবিষ্যৎকে ধ্বংস করছে।

ইসরায়েলের ফুটবলকে দায়ী করা হচ্ছে

আইন বিশেষজ্ঞরা লিখেছেন, ইসরায়েল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের  এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে অবস্থান না নেওয়া আসলে নিপীড়নের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে উয়েফার টুর্নামেন্টে তাদের অংশগ্রহণ অবৈধ হওয়া উচিত।

স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশন-এর নির্বাহী পরিচালক এলিসা ভন জোয়েডেন-ফোরগি, জাতিসংঘের সাবেক বিশেষজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক আইনবিদরা।

‘দ্বৈত নীতি ও ভণ্ডামি’

জাতিসংঘের মানবাধিকার হাই কমিশনারের নিউইয়র্ক অফিসের সাবেক পরিচালক ক্রেইগ মোখিবার বলেছেন, গণহত্যায় লিপ্ত কোনো দেশকে খেলাধুলায় অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া আসলে “সহযোগিতার কাজ”।

তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী শাসনের কথা স্মরণ করে বলেন, তখনও ক্রীড়া বয়কট ছিল বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করার অন্যতম অস্ত্র। এমনকি ফিফা ১৯৬১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে স্থগিত করেছিল।

মোখিবার আরও বলেন, “রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের পর উয়েফা এবং ফিফা কয়েক দিনের মধ্যে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিল। কিন্তু ফিলিস্তিনে স্পষ্ট গণহত্যা চললেও ইসরায়েলের ক্ষেত্রে তারা নীরব—এটা একেবারেই দ্বৈত নীতি।”

ক্রমবর্ধমান চাপ

ইসরায়েলের ক্লাবগুলো পশ্চিম তীরে অবৈধভাবে বসতি স্থাপিত এলাকায় খেলে আসছে, যা সরাসরি ফিফার নিয়মবিরোধী। নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ক্লাব অন্য দেশের ভূখণ্ডে অনুমতি ছাড়া খেলতে পারে না।

তারপরও ইসরায়েলি ক্লাব ও জাতীয় দল নিয়মিতভাবেই উয়েফা ও ফিফার টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে। উল্লেখ্য, পশ্চিম এশিয়ায় অবস্থিত হলেও ইসরায়েল ১৯৯৪ সালে আরব ও মুসলিম দেশগুলোর বয়কট এড়িয়ে উয়েফায় যোগ দেয়।

এদিকে, গাজায় ভয়াবহ হামলার মধ্যেও ইসরায়েলের জাতীয় দল ইউরোপীয় বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে খেলছে এবং তাদের ক্লাব ম্যাকাবি তেল আবিব এফসি এই মৌসুমে ইউরোপা লিগে অংশ নিচ্ছে।